বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এ আদেশ দেন। আগামী ৫ মার্চের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ড. বশির আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
পরে মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, নীতিমালা প্রণয়নের জন্য ২০১৮ সালের ১ আগস্ট গঠিত ৫ সদস্যের কমিটির দায়িত্ব ছিল নীতিমালা প্রণয়ন করা। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের কোনো কার্যক্রমের বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন দাখিল করতে পারিনি। এ কারণে ওই কমিটি এখন পর্যন্ত কি কাজ করেছে তার কার্যবিবরণী দাখিলের জন্য আগামী ৫ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত। এরপর পরবর্তী আদেশের জন্য ৭ মার্চ তা আদালতে উপস্থাপন হবে।
তিনি বলেন, সব ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা ক্লিনিকে প্যাথলজি পরীক্ষার মূল্য তালিকা টাঙানোর জন্য যে কমিটি গঠন করা হয় সে কমিটি আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি বৈঠকে বসবে। তখন এবিষয়ে পুরোপুরি তথ্য জানা যাবে।
মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, এরই মধ্যে আমরা জানতে পেরেছি, ২৭টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ৯৪টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার মূল্য তালিকা টানিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিবকে (সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা) কমিটির আহ্বায়ক করে গঠিত ওই কমিটির সদস্যরা হচ্ছেন- স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর পরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক মালিক সমিতির মহাসচিব।
এই কমিটি গঠনের বিষয়টি আদালতে দাখিলের পর শুনানি নিয়ে আদালত দুইমাসের মধ্যে এই কমিটিকে ‘দ্য মেডিক্যাল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স-১৯৮২’ অনুসারে নীতিমালা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
হিউম্যান রাইটস ল’ইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম গত জুলাই মাসে এ রিট দায়ের করেন।
রিটের পর ২৪ জুলাই হাইকোর্ট বেসরকারি ক্লিনিক/হাসপাতাল ল্যাবরেটরি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মূল্য তালিকা এবং ফি পাবলিক প্লেসে ১৫ দিনের মধ্যে আইন অনুসারে প্রদর্শনের নির্দেশ দেন।
ওইদিন আদেশে বলা হয়, দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ অনুসারে নীতিমালা তৈরি এবং বাস্তবায়নের জন্য ৬০ দিনের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে হবে।
এছাড়া রুলে চলমান হাসপাতাল এবং ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স অনুমোদন, তাদের সেবার বিষয় তদারকি এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ অনুসারে নীতিমালা তৈরির কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সব জেলা সদরের হাসপাতালে আইসিউ/সিসিইউ স্থাপনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
এ আদেশের পর হাইকোর্টে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালতের আদেশ অনুযায়ী ৯ আগস্টের মধ্যে মূল্য তালিকা টাঙানো নিশ্চিতকরণ এবং আদেশ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরকে অনুরোধ করা হয়েছে।
নীতিমালা তৈরির জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে অর্ডিন্যান্স প্রণয়নের অনুরোধ করা হয়েছে।
জেলা সদরে সিসিইউ/আইসিইউ স্থাপনের বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
ইএস/এমএ