বুধবার (৬ মার্চ) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
তবে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় জামিন আবেদনের ওপর শুনানির জন্য সোমবার পর্যন্ত সময় নিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।
আদেশের পর ড. মো. বশির উল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, দু’টি মামলা কার্যতালিকায় ছিলো। এর মধ্যে যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় হাইকোর্ট তাকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন।
হাইকোর্টের এ জামিনাদেশের বিরুদ্ধে আমরা আপিল বিভাগে আবেদন করবো। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায়ও জামিন আবেদন কার্যতালিকায় রয়েছে। এ আবেদনের শুনানির জন্য আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১১ মার্চ) পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আদালত।
এর আগে ফারুক হত্যা মামলায় কয়েক দফা ব্যর্থ হওয়ার পর ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল হাইকোর্টে জামিন মেলে রানার।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে এ জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।
এরপর ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ জামিনের এ স্থগিতাদেশ চলমান রেখে চার সপ্তাহের মধ্যে রুল নিষ্পত্তির আদেশ দেন।
এ আদেশ অনুসারে শুনানি শেষে রুল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। পরবর্তীতে নতুন করে বিচারিক আদালতে জামিন আবেদন করেন রানা।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ বলেছিলেন, ফারুক হত্যা মামলায় ৫ সেপ্টেম্বর এবং যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় ৩০ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালতে জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়। এরপর হাইকোর্টে আবেদন করেন আমানুর রহমান খান রানা।
আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সদস্য ফারুক আহমেদকে ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তৎকালীন এমপি রানা ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠান টাঙ্গাইলের বিচারিক আদালত।
এ মামলায় ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এরপর একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর দণ্ডবিধির ৩০২/ ১২০/৩৪ ধারায় সংসদ সদস্য রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন আদালত।
বর্তমানে মামলাটি সাক্ষগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তাদের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলযোগে টাঙ্গাইল শহরে এসে নিখোঁজ হন। ঘটনার পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা করেন। পরে তদন্ত করে পুলিশ ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে। এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকার খন্দকার জাহিদ গত বছর ১১ মার্চ, শাহাদত হোসেন ১৬ মার্চ এবং হিরন মিয়া ২৭ এপ্রিল আদালতে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেন, এমপি আমানুর রহমান খান রানার দিক নির্দেশনায় যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০১৯
ইএস/আরআর