ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘৫৯ এলাকায় ওয়াসার ময়লা পানির প্রবণতা বেশি’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৭ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৯
‘৫৯ এলাকায় ওয়াসার ময়লা পানির প্রবণতা বেশি’ ওয়াসা ভবন

ঢাকা: ঢাকা ওয়াসার লিংকে গত তিন মাসে ময়লা পানির অভিযোগের তালিকা বিশ্লেষণ করে ১০টি জোনের ৫৯ এলাকায় ময়লা পানির প্রবণতা বেশি বলে এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খান ১৩ মে প্রতিবেদনটি স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পাস) এবং ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক সরবরাহকৃত বাসা-বাড়ির ট্যাপে পানি পরীক্ষা শেষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক মো. জহিরুল ইসলাম বরাবর পাঠান।  

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ওয়াসা লিংক ১৬১৬২ -এ বিগত ৩ (তিন) মাসের ময়লা পানির অভিযোগের তালিকা এতদসঙ্গে সংযুক্ত করা হল। ময়লা পানির অভিযোগের তালিকা বিশ্লেষণ করে নিম্মোক্ত এলাকা সমূহে ময়লা পানি প্রাপ্তির প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়—
মডস জোন-১: যাত্রাবাড়ি, বাসাবো, মুগদা, রাজারবাগ, কুসুমবাগ, জুরাইন, মানিকনগর, মান্ডা, ধোলাইপাড় ও মাতুয়াইল।

মডস জোন-২: ভাগলপুর, লালবাগ, বকশীবাজার এবং শহীদনগর।

মডস জোন-৩: জিগাতলা, ধানমন্ডি, শুক্রাবাদ, কলাবাগান, ভূতেরগলি, এবং মোহাম্মদপুর।

মডস জোন-৪ শেওড়াপাড়া, পীরেরবাগ, মনিপুর, পাইকপাড়া, কাজীপাড়া এবং মিরপুর।

মডস জোন-৫: মহাখালী এবং তেজগাঁও।

মডস জোন-৬: সিদ্ধেশ্বরী, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, মগবাজার, নয়াটোলা, রামপুরা, মালিবাগ এবং পরীবাগ।

মডস জোন-৭: কদমতলী, ধনিয়া, শ্যামপুর, রসুলবাগ, মেরাজনগর, পাটেরবাগ, শনিরআখড়া, কোনাপাড়া এবং মুসলিম নগর।

মডস জোন-৮: বাড্ডা, আফতাবনগর, ভাটারাসহ চারটি এলাকা।

মডস জোন-৯: উত্তরা, খিলক্ষেত, ফায়েদাবাদ, মোল্লারটেক এবং রানাভোলা।

মডস জোন-১০: কাফরুল, কাজীপাড়া, মিরপুর, কচুক্ষেত এবং পল্লবী।

এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক সরবরাহকৃত বাসা-বাড়ির ট্যাপে পানি পরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গঠিত কমিটিরও একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৪ মে কমিটির তৃতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিআরটিসি, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইসিডিডিআরবি এর ল্যাবে পানির বিভিন্ন প্যারামিটার এর মূল্যহার একীভূত করে মোট বাজেট সংযুক্ত করা হলো।

বাজেটে বলা হয়, এই ১০টি জোনের প্রত্যেক এলাকা থেকে ৩৫৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হবে। ফলে মোট নমুনার সংখ্যা দাঁড়াবে ১০৬৫টি। এই ১০৬৫ টি নমুনা করে তিনটি ল্যাবরেটরিতে রোগজীবাণু ও ভৌত রাসায়নিক সংক্রান্ত পরীক্ষা করতে খরচ হবে মোট ৭৫ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা।

এ প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের পর বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে মতামত শুনতে ওই কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের (মাইক্রোবায়োলজি ডিপার্টমেন্ট) চেয়ারম্যান ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমানকে আদালতে আসতে বলেছেন।

আগামী ২১ মে সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে আসতে বলা হয়েছে।

আদালতে স্থানীয় সরকারের পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। রিটকারী পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ। ওয়াসার পক্ষে ছিলেন এম মাসুম।

পরে আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য কত টাকা ব্যয় হবে সেটা আজকে প্রতিবেদন আকারে দাখিল করেছে। এ অবস্থায় একজন এক্সপার্টের মতামত দরকার তাই কমিটিতে যে তিনজন আছেন তাদের মধ্য থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমানের মতামত জানতে তাকে ২১ মে সাড়ে ১০ দশটায় আসতে বলেছেন হাইকোর্ট।

এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ৬ নভেম্বর হাইকোর্ট ঢাকা ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানের নামা উল্লেখ করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করার আদেশ দেন।

গত ১৮ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

কমিটির সদস্যরা হলেন, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী মনিরুল আলম, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম বদরুজ্জামান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সাবিতা রিজওয়ানা রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৯
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।