ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

কেমিক্যাল ঠেকাতে মৌসুমি ফল পরীক্ষার নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৯ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৯
কেমিক্যাল ঠেকাতে মৌসুমি ফল পরীক্ষার নির্দেশ

ঢাকা: মৌসুমি ফলে কেমিক্যালের ব্যবহার হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে  আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুইমাসের মধ্যে বিএসটিআইকে এ নির্দেশ পালন করতে হবে।
 

এছাড়া ফলে রাসায়নিকের মাত্রা পরীক্ষার জন্য দেশের সব বন্দরে কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট বসাতে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
 
ফলমূলে কেমিক্যাল ব্যবহাররোধে করা এক রিটের শুনানিতে রোববার (২৩ জুন) এ নির্দেশ দেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ।


 
আদালতে রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। বিএসটিআইয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সরকার এম আর হাসান। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম।
 
গত ২০ মে এক আদেশে হাইকোর্ট ফলে কেমিক্যাল ব্যবহাররোধে সারাদেশের ফলের বাজার ও আড়তে নজরদারি করতে পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিএসটিআই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক, র‌্যাবের মহাপরিচালক, বিএসটিআই’র কেমিক্যাল টেস্টিং উইংয়ের পরিচালককে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। সাতদিনের আদেশ পালন করে ১৮ জুন বাস্তবায়ন প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিলো।
 
১৮ জুন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেছিলেন, বিএসটিআই ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে দুটি প্রতিবেদন আদলতে দাখিল করা হয়েছে। পুলিশের প্রতিবেদনটা এসেছে কিন্তু দাখিল করার জন্য প্রস্তুত করতে না পারায় সময় আবেদন করেছিলাম। আদালত ২৩ জুন (রোববার) পরবর্তী আদেশের জন্য রেখেছেন। একই সঙ্গে ওইদিন প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।
 
রোববার বিএসটিআই, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও র‌্যাবের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
 
বিএসটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১০টি ফলের ৪০টি দোকান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু তাতে ফরমালিন পাওয়া যায়নি।
 
এই প্রতিবেদন দেখে আদালত বলেন, আপনারা বলছেন, ফরমালিন পাওয়া যায়নি। আমরাতো শুধুই ফরমালিনের কথা বলিনি। আমরা শুরু থেকেই বিভিন্ন ক্ষতিকর কেমিক্যালের যেমন কার্বাইড, পেস্টিসাইড ইত্যাদির কথা বলছি।
 
ফলের উৎপাদন থেকে বাজারজাত করা পর্যন্ত যারা রয়েছেন তাদের সতর্ক করে আদালত বলেন, ফলে রাসায়নিকের প্রয়োগ ঠেকাতে প্রয়োজনে আরো কঠোর হতে হবে। আমাদের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ নম্বর ধারায় বর্ণিত সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান প্রয়োগের কথা ভাবতে হবে। জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা প্রথম। মনে রাখবেন, জনগণ বাঁচলে দেশ বাঁচবে। জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
 
আদালত আরও বলেছেন, আমাদের দেশে সবই পাকা কলা দেখি। কোথাওতো কাঁচাকলা দেখি না। সব কলাই কি এমনিই পাকা? এগুলো আপনাদের দেখতে হবে।
 
এরপর আদালত আদেশ দেন।
 
আদেশের পর মনজিল মোরসেদ বলেন, মৌসুমি ফলে কেমিক্যালের ব্যবহার হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুইমাসের মধ্যে বিএসটিআইকে এ নির্দেশ পালন করতে হবে।
 
এছাড়া ফলে রাসায়নিকের মাত্রা পরীক্ষার জন্য দেশের সব বন্দরে কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট বসাতে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে তিন মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
 
গত ৯ এপ্রিল রাজশাহীসহ দেশের বড় আম বাগানে কেমিক্যালের ব্যবহার রোধে সাতদিনের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তদারকি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
 
আদেশে একটি পর্যবেক্ষণ টিম ফলের বাজার ও গুদামে মনিটর করবে যাতে সারাদেশে কেউ কেমিক্যাল ব্যবহার করে আম পাকাতে না পারে। পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিএসটিআই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক, র‌্যাবের মহাপরিচালক, বিএসটিআই’র পরিচালক (কেমিক্যাল টেস্টিং উইং) এ আদেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দেবে।
 
আবেদনের পর মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, এক আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি আম বাগানের বিষয়ে সাত দফা নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্ট রায় দেন। কিন্তু হঠাৎ করে আমরা দেখছি গতবছরের কেমিক্যাল ব্যবহারের প্রবণতা। একারণে আবেদন করেছি নির্দেশনাটা ফের দেওয়ার জন্য।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৯
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।