ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ পছন্দ করেন না হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩২ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১৯
‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ পছন্দ করেন না হাইকোর্ট

ঢাকা: বরগুনায় রিফাত শরীফকে দিনে-দুপুরে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার একেএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার মামলার সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন।

গত ২৬ জুন রিফাত খুনের পরদিন ২৭ জুন বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

ওইদিন আদালত ২টার মধ্যে ডিসি-এসপির (জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার) কার্যক্রম জানতে চান। ২টার মধ্যে পদক্ষেপ জানানোর নির্দেশনায় তখন আদালত বলেছিলেন, আসামিরা যেন সীমান্ত পার হতে না পারে। একইসঙ্গে বৃহস্পতিবার মামলার অগ্রগতি জানাতে বলেন।

তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, এই মামলার কোনো আসামি দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে পারেনি। এরই মধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত ৫ জন আসামি এবং সন্দেহভাজন ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলাটির প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। শত শত পুলিশ-র‍্যাব সদস্য মাঠে কাজ করছেন আসামিদের ধরতে।

এরপর আদালত বলেন, ‘আমরা এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং (বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড) পছন্দ করি না। হয়তো প্রয়োজনের খাতিরে অনেক সময় জীবন বাঁচানোর তাগিদে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী তা বাহিনী করে থাকে। তবে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে আরও সতর্ক হতে হবে। আইন যে সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে সেটা যেন নিশ্চিত হয়। এক দিনে এই নয়ন বন্ডরা তৈরি হয় না। কেউ না কেউ তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে। কেউ না কেউ লালন-পালন করে ক্রিমিনাল বানায়। ’

গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা রিফাতকে। তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মারা যান তিনি। তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের বাধা দিয়েও স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি।

ঘটনাটির ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, নয়ন বন্ড উপর্যুপরি কুপিয়ে জখম করছিল রিফাত শরীফকে। তার সঙ্গে তখন ছিলেন মামলার ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী ও ৩ নম্বর আসামি রিশান ফরাজীকে।

এদের মধ্যে নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রিফাত ফরাজী (২৩), চন্দন (২১), মো. হাসান (১৯), মো. অলিউল্লাহ অলি (২২), টিকটক হৃদয় (২১)।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ভিডিও ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে মো. নাজমুল হাসান (১৯), তানভীর (২২), মো. সাগর (১৯), কামরুল হাসান সাইমুন (২১) ও রাফিউল ইসলাম রাব্বিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এদের মধ্যে রিফাত, চন্দন ও হাসান সাত দিনের এবং সাগর, সাইমুন ও নাজমুল পাঁচদিনের রিমান্ডে রয়েছে। আর রিফাত হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতকে জবানবন্দি দিয়েছে তানভীর।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৯
ইএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।