ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ওসি মোয়াজ্জেমের শুনানি পিছিয়ে ১৭ জুলাই

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
ওসি মোয়াজ্জেমের শুনানি পিছিয়ে ১৭ জুলাই

ঢাকা: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আটক সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের অভিযোগ গঠন শুনানি পিছিয়ে ১৭ জুলাই (বুধবার) দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বুধবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে পরবর্তী এ দিন ধার্য করা হয়।  

বুধবার মোয়াজ্জেম হোসেনের অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল।

কিন্তু আসামিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করতে না পারায় শুনানি পিছিয়ে ১৭ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছে।

এছাড়া আসামির আইনজীবী ফারুক আহম্মেদও আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ভিডিও সংবলিত পেনড্রাইভের কপি জমা দিতে পারেননি। ফারুক ইচ্ছা করেই পেনড্রাইভ জমা না দিয়ে সময়ক্ষেপণ করেছেন বলে জানায় আদালত।  

আদালত ফারুককে বলেন, আপনাকে নকলখানা থেকে সিডি জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। আপনি তাও জমা দেননি। তখন আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ আজকেই (বুধবার) সিডি জমা দেবেন বলে আদালতকে জানান।

এর আগে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ আদেশ দেন।

অন্যদিকে মোয়াজ্জেম হোসেনের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ আসামিকে ডিভিশন দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে ২৪ জুন আদালত কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশনের ব্যবস্থা করতে জেল সুপারকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

গত ১৭ জুন একই আদালত আসামি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে ৩০ জুন মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ১০ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছিল।  

এর আগে ১৬ জুন রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে আসামি মোয়াজ্জেম হোসেনকে আটক করে পুলিশ। এরপর ১৭ জুন তাকে ফেনীর সোনাগাজী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে শাহবাগ থানা পুলিশ। ওইদিনই ফেনী সোনাগাজী থানার এসআই আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম মোয়াজ্জেমকে আদালতে হাজির করে।  

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে ‘অসম্মানজনক’ কথা বলায় ও তার জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গত ১৫ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।  

বাদীর জবানবন্দি নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় করা অভিযোগটি পিটিশন মামলা হিসেবে নেন ট্রাইব্যুনাল।  সেই সঙ্গে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ডিআইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে তদন্ত করে ৩০ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে ২৭ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানার পক্ষে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই। একই দিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে একই ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।  গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৭ জুন দিন ধার্য করেন আদালত। ওইদিনই তাকে আদালতে হাজির করা হয়।  

পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে বাদীসহ ১৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এর মধ্যে সোনাগাজী থানার চারজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।

চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী নুসরাতের মা। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।  

সে সময় যৌন হয়রানির অভিযোগ করতে থানায় যাওয়ার পর ওসির কক্ষে ফের হয়রানির শিকার হতে হয় নুসরাতকে। ‘নিয়ম না মেনে’ জেরা করতে করতেই নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন ওসি। মৌখিক অভিযোগ নেওয়ার সময় দু’জন পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।  

এরপর ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষার আগ মুহূর্তে নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয় দুর্বৃত্তরা। মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানালে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।  

ওইদিনই তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ১০ এপ্রিল ঢামেকে চিকিৎসাধীন নুসরাতের মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
এমএআর/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।