ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ডেঙ্গু: স্থায়ী কর্মপরিকল্পনা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১২ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৯
ডেঙ্গু: স্থায়ী কর্মপরিকল্পনা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট হাইকোর্ট/ফাইল ফটো

ঢাকা: সারাদেশে বছরজুড়ে এডিস মশা নিধন ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো স্থায়ী কর্মপরিকল্পনা রয়েছে কিনা তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

আগামী ২৬ আগস্ট আদালতকে অবহিত করতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সারাদেশে কত রোগী ভর্তি হয়েছে তার একটা পরিসংখ্যানও দাখিল করতে বলা হয়েছে।


 
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
 
এছাড়াও আদালত দুই সিটি করপোরেশনকে নতুন জনবল নিয়োগ, তারা কীভাবে, কোথায়, কতক্ষণ কাজ করছে তার বিস্তারিত প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
 
আদালতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার তৌফিক ইনাম টিপু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।
 
শুনানিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান আদালতে বলেন, মশক নিধনে ও সচেতনতা সৃষ্টিতে উত্তর সিটি করপোরেশনকে প্রায় ১৬শ এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে ২২শ অতিরিক্ত জনবল নিয়োগে আদেশ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৫ কোটি টাকা।
 
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, মশা তো কমছে না। এবছর যেহেতু মশার প্রকোপ দেখা দিয়েছে, সেটা যে আগামীতে হবে না তার তো কোনো নিশ্চয়তা নেই। এজন্য মশা নিধন ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের কর্মপরিকল্পনা থাকা দরকার। যেমনটা কলকাতায় রয়েছে। তারা মশা নিধনে এরিয়াল স্প্রে করে।

আদালত আরও বলেন, এডিশ মশার প্রকোপ নিয়ে এবছর অনেক আগে থেকেই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছিল। কিন্তু সিটি করপোরেশনগুলো তা আমলে নেয়নি। এক্ষেত্রে দুই সিটির অবহেলা রয়েছে। শুরুতেই স্থান নির্ধারণ করে মশা নিধনে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল।
 
আদালত আরও বলেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে প্রতিদিন রোগী ভর্তি হচ্ছে। ভর্তি রোগীর সংখ্যা দেখলেই বোঝা যাচ্ছে ওই ওষুধ কতটা কার্যকর। যখন রোগী ভর্তি শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে তখন প্রকৃত চিত্র বোঝা যাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের উদ্বেগ থাকবেই।
 
উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আইনজীবী আদালতে বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে সারাদেশে ছয় শতাংশ রোগী কমেছে। এসময় আদালত বলেন, আপনারা (সিটি করপোরেশন) তো আর সারাদেশে ওষুধ ছিটান না। তাই সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমলে সেটা তো আপনাদের কর্মকাণ্ডের ফল না। ওটা বাই ন্যাচারালই কমছে। আর রোগী কমার কথা যদি বলেন তাহলে বলতে হবে, ঈদে মানুষ ঢাকা ছেড়ে বাড়ি যাওয়ায় মশা কামড়াতে পারেনি। এখন আবার মানুষ ঢাকায় ফিরে এসেছে, তাই একসপ্তাহ পর বোঝা যাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী কমেছে কিনা।
 
নতুন ওষুধ আনার বিষয়ে আদালত বলেন, নতুন ওষুধে কি মশা মরে? নাকি আবার দক্ষিণের মশা উড়ে উত্তরে চলে যায়?
 
এসময় আইনজীবী বলেন, ৪০ হাজার লিটার নতুন ওষুধ কেনা হয়েছে। ১১ আগস্ট থেকে এই ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। অনেকটা কার্যকর। আর আমরা যত তথ্য-উপাত্ত দেই না কেন যতক্ষণ পর্যন্ত হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো কিছুই ঠিকভাবে চলছে বলা যাবে না।
 
এসময় আদালত বলেন, আমরা যখন দেখবো হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ হচ্ছে, তখনই বুঝবো যে মশার ওষুধ কার্যকর ও ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধ করা গেছে।
 
১৪ জুলাই স্বপ্রণোদিত এক আদেশে ঢাকা সিটিতে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়াসহ এডিস মশা নির্মূল ও ধ্বংসে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়ে দিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
ওই আদেশের ধারবাহিকতায় উক্ত আদেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৯
ইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।