ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘নুসরা‌তের দুই বান্ধবীর বক্তব্যও ভি‌ডিও ক‌রেন ও‌সি’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৯
‘নুসরা‌তের দুই বান্ধবীর বক্তব্যও ভি‌ডিও ক‌রেন ও‌সি’ পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে ওসি মোয়াজ্জেমকে

ঢাকা: অধ্য‌ক্ষের বিরু‌দ্ধে শ্লীলতাহানির অ‌ভি‌যোগ বিষয়ে নুসরাত জাহান রা‌ফির স‌ঙ্গে তার দুই বান্ধবীর বক্তব্যও রেকর্ড করেন ফেনীর সোনাগাজী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও‌সি) মোয়া‌জ্জেম হো‌সেন। আর এই ভি‌ডিও তি‌নি রেকর্ড ক‌রেন মামলার জন্য প্র‌য়োজনীয়তার কথা ব‌লে।

সেসব ভি‌ডিওর মধ্যে নুসরা‌তের‌টি প‌রে স্যোশ্যাল মি‌ডিয়ায় ভাইরাল হয়।

ও‌সি মোয়া‌জ্জে‌মের বিরু‌দ্ধে ডি‌জিটাল নিরাপত্তা আই‌নের মামলায় দেওয়া সা‌ক্ষ্যে এসব কথা ব‌লেন তার দুই বান্ধবী নিশাদ সুলতানা (১৮) ও নাস‌রিন সুলতানা ফু‌র্তি (১৮)।

 

সোমবার (০৪ ন‌ভেম্বর) বেলা আড়াইটা থে‌কে সন্ধ্যা পৌ‌নে ৬টা পর্যন্ত চ‌লে এই সাক্ষ্যগ্রহণ। সাক্ষী‌দের জবানব‌ন্দি রেকর্ড ক‌রেন সাইবার ট্রাইব্যুনা‌লের বিচারক আসসামছ জগলুল হো‌সেন।

একই‌দি‌নে এই মামলায় তা‌দের আ‌গে সাক্ষ্য দেন আই‌টি বি‌শেষজ্ঞ ও পি‌বিআই প‌রিদর্শক মোহাম্মদ বাদী। এই মামলায় সব‌মি‌লি‌য়ে ১১ জন আদাল‌তে সাক্ষ্য দি‌লেন। আদালত তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহ‌ণের জন্য আগামী ১১ ন‌ভেম্বর দিন ধার্য ক‌রেছেন।

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে ‘অসম্মানজনক’ কথা বলায় ও তার জবানবন্দি ভিডিও ক‌রে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় চল‌তি বছর ১৫ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ওইদিনই আদালত এই মামলার তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।

গত ২৭ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানার পক্ষে মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই। একইদিনে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

গত ১৬ জুন রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করা হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

পরদিন ১৭ জুলাই আদালত আসামি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অ‌ভি‌যোগ গঠ‌নের মাধ্য‌মে বিচার শুরুর আ‌দেশ দেন।

চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিরাজ-উদ দৌলাকে পরে গ্রেফতার করা হয়। তবে অভিযোগ দেওয়ার সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্নের পাশাপাশি তার বক্তব্য ভিডিও করেন ওসি মোয়াজ্জেম। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়। মৌখিক অভিযোগ নেওয়ার সময় ভি‌ডিও‌তে দু’জন পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।

গত ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষার আগ মুহূর্তে বান্ধবীকে মারধরের কথা বলে নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে সেই মামলা তুলে নিতে চাপ দেয় দুর্বৃত্তরা। এ‌তে অস্বীকৃতি জানালে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

ওইদিন নুসরাতকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়।

হত্যা মামলায় এর ম‌ধ্যেই অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ জন‌কে মৃত্যুদণ্ড দি‌য়ে‌ছেন ফেনীর এক‌টি আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, ন‌ভেম্বর ০৪, ২০১৯
কেআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।