ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

জঙ্গিদের হাজিরা ঘিরে আদালতে ব্যাপক নিরাপত্তা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৯
জঙ্গিদের হাজিরা ঘিরে আদালতে ব্যাপক নিরাপত্তা আদালত থে‌কে বের করা হচ্ছে জঙ্গি রিগ্যানকে। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: কল্যাণপুরের জাহাজবাড়িতে অভিযানে গ্রেফতার জঙ্গিদের হাজিরা ঘিরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আদালতে আইনজীবী ও মামলা সংশ্লিষ্ট ছাড়া কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি ভেতরে যাওয়ার অনুমতি পাননি গণমাধ্যমকর্মীরাও।

গত ২৭ নভেম্বর হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন আসামি এই মামলার আসামি হওয়ায় নেওয়া হয় বাড়তি সতর্কতা। কারণ আগের দিন আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) চিহ্ন সম্বলিত টুপি পরাকে ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) আইনজীবীদেরও তল্লাশি করে আদালতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। তবে প্রবেশে বাধা পান বিচারপ্রার্থীরা। এজন্য আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের অনেকেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন।

এদিন মামলার ১০ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা সাতজনকে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে হাজির করা হয়। তাদের মাথায় হেলমেট ও গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরানো হয়। এদিন মামলার পলাতক আজাদুল কবিরাজের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়।  

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম ছারোয়ার খান জাকির বাংলানিউজকে বলেন, আদালত পলাতক এক আসামির বিরুদ্ধে ক্রোকী পরোয়ানা জারি করেছেন। এর মধ্যে পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব না হলে তাকে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১৯ ডিসেম্বর দিন রেখেছেন আদালত। এরপরও পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব না হলে বা হাজির না হলে তাকে পলাতক রেখেই মামলার বিচারকাজ শুরু হবে।

২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ১০ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেন। চলতি বছর ৯ মে মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস।

এই মামলার আসামিরা হলেন রাকিকুল হাসান রিগ্যান (২১), সালাহ উদ্দিন কামরান (৩০), আব্দুর রউফ প্রধান (৬৩), আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ (২০), শরীফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ওরফে সোলায়মান (২৫), মামুনুর রশিদ রিপন ওরফে মামুন (৩০), আজাদুল কবিরাজ ওরফে হার্টবিট (২৮), মুফতি মাওলানা আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুর (৬০), আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে নাসরুল্লা হক ওরফে মুসাফির ওরফে জয় ওরফে কুলমেন (৩৩), হাদিসুর রহমান সাগর (৪০)।

এর মধ্যে আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুর ও আব্দুর রউফ প্রধান জামিনে আছেন। আর আজাদুল কবির পলাতক। পলাতক একজন ছাড়া বাকিরা এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

জাহাজবাড়িতে অভিযানে নিহত নয়জন ও নারায়ণগঞ্জে নিহত তামিম চৌধুরী এবং আশুলিয়ায় নিহত সরোয়ার জাহানকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

২০১৬ সালের ২৫ জুলাই কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কে জাহাজবাড়িতে রাতভর অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সকালে এক ঘণ্টার মূল অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হন। আহত হন রিগ্যান নামে আরও একজন।

অভিযানের দু’দিন পর মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. শাহ জালাল আলম সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯
কেআই/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।