বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের প্রতিবেদন দাখিলে সময় চেয়েছিলো রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর আদালত কোনো ব্যর্থতা ছাড়াই ১১ তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়ে শুনানি ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেন।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিএসএমএমইউ'র ভিসি জানিয়েছেন কিছু টেস্ট হইছে, কিছু বাকী আছে। তাই প্রতিবেদন দিতে সময় দরকার। এরপর আদালত কোনো ব্যর্থতা ছাড়াই ১১ তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়ে শুনানি ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেন।
আরও পড়ুন>>>সুপ্রিমকোর্টে বিএনপিপন্থিদের 'ন্যক্কারজনক' দিন!
আরও পড়ুন>>>‘বাড়াবাড়ির একটা সীমা আছে’
এসময় খালেদার জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন প্রতিবেদন রোববার বা সোমবার দিতে নির্দেশনার আবেদন জানান। কিন্তু তারিখ পরিবর্তন করেননি আদালত। এর পরপরই বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালত কক্ষে হইচই শুরু করেন। এক পর্যায়ে আদালত এজলাস কক্ষ ত্যাগ করেন।
কিন্তু আইনজীবীরা এজলাসে অবস্থান করে স্লোগান দিতে থাকেন।
আরও পড়ুন>> খালেদার মেডিক্যাল প্রতিবেদন দিতে সময়, আইনজীবীদের হইচই
আরও পড়ুন>> এটা খুবই ন্যক্কারজনক: অ্যাটর্নি জেনারেল
বিরতির (১১টা থেকে সাড়ে ১১টা) পর ফের আদালত বসলে জয়নুল আবেদীন শুনানি করতে চান। কিন্তু আদালত তাতে সায় দেননি। এর মধ্যে হট্টগোলের কারণে অন্য মামলার শুনানিও ব্যাহত হয়। এ সময় বিএনপিপন্থি ২/১ জন সিনিয়র আইনজীবী আদালত কক্ষ থেকে বের হতে চাইলে জুনিয়রদের বাঁধার মুখে পড়েন।
পরবর্তী আপিল বিভাগের বিচারকাজের শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময়সীমা সোয়া একটার দিকে এজলাস কক্ষ ত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির বেঞ্চ। পরে আইনজীবীরাও বের হয়ে যান।
বৃহস্পতিবার আদালত কক্ষে হট্টগোলের পর আইনজীবীরা এমন প্রতিক্রিয়া দেন।
বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, তারা যে আইনের শাসনে বিশ্বাস করে না আজ তার প্রমাণ হয়েছে। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না সুপ্রিমকোর্টের ভিতরে ঢুকে তারা এ ধরনের আচরণ করতে পারে। তারা যে আচরণ করেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এ ধরনের আচরণকে ঘৃণা করে উল্লেখ করে তিনি আদালত থেকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
আরও পড়ুন>> বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হট্টগোল অব্যাহত
আরও পড়ুন>> তারা আইন-আদালত মানেন না: সুপ্রিমকোর্ট বার সভাপতি
সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু বলেন, তারা আদালতের কাজে বাধা দিয়ে আদালত অবমাননার অপরাধ করেছেন, এটা শাস্তিযোগ্য। প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করতে চাই, এ ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। না হলে ভবিষ্যতেও তারা এ রকম ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ করবে। আগামী তারিখে একই ঘটনা ঘটাবে।
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ফজলে নূর তাপস বলেন, তারা এজলাসে প্রধান বিচারপতিসহ পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ নজিরবিহীন ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা আদালতকক্ষে স্লোগান দিয়েছে, তারা বিশৃঙ্খলা করেছে এবং বিচারের পরিবেশ বিনষ্ট করেছে। ভবিষ্যতে যাতে এ রকম ন্যক্কারজনক ঘটনার অবতারণা না ঘটে তার জন্য প্রশাসনকে আমরা অনুরোধ করবো, তারা যেন সমুচিত ব্যবস্থা নেয়।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, এটি একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। আমরা জেনারেশনের কাছে কিসের উদাহরণ দেখালাম। এটাই আমার প্রশ্ন। আজ তো জামিনের ওপর কোনো আদেশ হয়নি। তারপরেও এ আচরণ কেনো। তাদের জ্যেষ্ঠরা জুনিয়রদের থামাতে পারেনি। এটা জ্যেষ্ঠদের ব্যর্থতা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯
ইএস/এএ