এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রায় দেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
পরে এম কে রহমান বলেন, যশোর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল রিট করেছিলেন। রুল ইস্যু হয়েছে। রুল শুনানির পরে বুধবার অ্যাবসুলেট হয়েছে। কোর্ট বলেছে, এ কাজটা আইনগত বর্হিভূত। কেবিনেট সেক্রেটারিকে বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী সংবিধান ও আইন মোতাবেক কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। রায় প্রাপ্তির এক মাসের মধ্যে ভাইস চ্যান্সেলর রেজিস্ট্রার ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি সংবিধানের ৪ (ক) অনুচ্ছেদে জাতির পিতার ছবি সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের কথা আছে। সেটা অবমাননা করা যাবে না। ৭ (ক) অনুচ্ছেদে আছে কেউ যদি সংবিধানের কোন অংশ বা অনুচ্ছেদ অসম্মান করার চেষ্টা করে রাষ্ট্রদ্রোহে সে অভিযুক্ত হবে। ’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আদেশে আদালত বলেছেন তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সংবিধান এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। ....পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
‘মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। সেখানে জড়িতদের বিরুদ্ধে উপাদান পেয়েছেন। তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছেন। বিশেষ করে তিনজন- উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা। ’
এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট করেছিলেন যশোর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বিপুল। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।
কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিসির লিখিত বক্তব্য, উপস্থিত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বক্তব্য, ভিসি অফিসের রক্ষিত কাগজপত্র ও পরিবেশ পরিস্থিতি এবং এ রিট দাখিলকারীর বক্তব্য পর্যালোচনা করা হয়। তাছাড়া ডেস্ক ক্যালেন্ডারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সার্বিক পর্যালোচনায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ২০১৮ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি এবং ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে তারা দায়িত্ব পালন করেননি।
তদন্ত প্রতিবেদনের মন্তব্য অংশে বলা হয়, এক- ২০১৮ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির জনকের ছবির উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির নাম লেখা সমীচীন হয়নি। এজন্য কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব এড়াতে পারেন না।
দুই) ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডার পুনঃমুদ্রিত। পূর্বের (প্রথম) প্রিন্ট করা কপিতে জাতির জনকের ছবি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিদ্র করে স্পাইরাল বাইন্ডিং করা হয়েছে। এছাড়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি (ছবির মাথা কেটে) বিকৃত করা হয়েছে। তা প্রথম মুদ্রিত ডেস্ক ক্যালেন্ডার থেকে স্পষ্টতই প্রমাণ পাওয়া যায়।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারে ক্ষেত্রে যে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল, তা করেননি। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই তারা দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। তাদের ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বর করা উচিত ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২০
ইএস/এমএ