ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতে তাদের রাখা হয়েছে। রায়ের আগেই তাদের আদালতে তোলা হবে বলে জানান কোর্ট হাজতের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
দীর্ঘ দুই দশক আগের চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় গতবছরের ১ ডিসেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এরপর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম রায়ের জন্য এই দিন ঠিক করেন।
মামলায় যেসব আসামিকে বিচারে সোপর্দ করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকেই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবেন বলে আশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ।
ওই আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সালাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, বেশ আগের এই ঘটনায় দোষীদের দায় প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আশা করছি আসামিরা সবাই সর্বোচ্চ সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবে।
তিনি বলেন, ঘটনাটি জোট সরকারের আমলে একধরনের ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই বিচারে অনেক বিলম্ব হয়েছে। তবে পুলিশের সিআইডির পুনঃতদন্তে মূল রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দোষীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে, এটা স্বস্তির।
এক প্রশ্নের উত্তরে আইনজীবী সালাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, বিলম্বের কারণে ঘটনার অনেক আলামত হয়তো নষ্ট হয়েছে। তারপরও রাষ্ট্রপক্ষে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। যেটুকু সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আসামিদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ডই হবে বলে আমরা আশা করি।
২০১৪ সালের ২১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১০৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৮ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। তবে আসামিপক্ষে কেউ সাফাই সাক্ষী দেননি।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, রাজধানীর পল্টন ময়দানে ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি সিপিবির সমাবেশে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় ৫ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়। ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে আসামিদের বিরুদ্ধে নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি মর্মে তদন্ত শেষে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছিল।
২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা ও ২০০৫ সালের আগস্টে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা হয়। এসব ঘটনায় জঙ্গিরা জড়িত প্রমাণ পাওয়ার পর ২০০৫ সালে মামলাটি আবার পুনঃতদন্তের আদেশ দেন আদালত।
মামলাটি পুনঃতদন্তের পর ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর মৃণাল কান্তি সাহা।
এই মামলায় মোট ১৩ জন আসামিকে বিচারে সোপর্দ করা হয়। তারা হলেন- মুফতি আব্দুল হান্নান, মুফতি মঈন উদ্দিন শেখ, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মো. মশিউর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মহিবুল মুত্তাকিন, আমিনুল মুরসালিন, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিরাজ ও নূর ইসলাম।
এর মধ্যে হরকতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় এই মামলার অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বাকি আসামিদের মধ্যে প্রথম চারজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকলেও ৮ জন পলাতক রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩১ ঘণ্টা, জানয়ারি ২০, ২০২০
কেআই/এমএ