সোমবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. নজরুল ইসলাম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আলতাফ হোসেন ও তার স্ত্রী ফরিদা, জামির আলী এবং শাহজাহান।
সংশ্লিষ্ট আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হুমায়ুন কবির চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ঘটনার বিবরণীতে জানা যায়, কাউসারের বাবা মো. ইব্রাহিম আলী কামরাঙ্গীরচরের জাউলাহাটিতে পরিবার নিয়ে থাকেন। কাউসার দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মেজো ছিল।
কাউসারের বাবার সেখানে একটি মুদিপণ্যের দোকান আছে। শাহজাহান সেখানকার একটি সেলুনে কাজ করতেন। কাউসার সেখানে যেতেন। তাই কাউসারের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল।
টাকার জন্য শাহজাহান ও জামির কাউসারকে অপহরণের পরিকল্পনা করে। ২০১২ সালের ১৬ মে সকাল থেকে ১৭ মে বিকেলের যেকোনো সময় তারা কাউসারকে অপহরণ করে। আলতাফ হোসেন ও ফরিদার বাসায় খাটের নিচে তাকে আটকে রাখে। চিরকুট এবং মোবাইলের মাধ্যমে কাউসারের বাবার কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চায় তারা।
এ ঘটনায় কাউসারের পরিবার কামরাঙ্গীরচর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। তবে পুলিশ কাউসারকে উদ্ধার করতে পারেনি। পরিবারের লোকজন একপর্যায়ে ১৯ মে নবাবগঞ্জে অপহরণকারীদের হাতে মুক্তিপণের টাকা তুলে দেয়। কিন্তু অপহরণকারীরা কাউসারকে ফেরত দেয়নি।
ওই বছরের ২৬ মে অপহরণের মামলা করা হয়। মামলাটি পরে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। এ মামলায় প্রথমে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা জামিনে মুক্তি পায়।
এরপর অপহরণকারীরা ইব্রাহিমের কাছে আরো এক লাখ টাকা দাবি করে। ১৫ আগস্ট মো. জামিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আলতাফ, তার স্ত্রী ফরিদা ও শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তারা জানায়, অপহরণের পরদিন ১৭ মে রাতেই কাউসারকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে।
তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রায় তিন মাস পর ২০১২ সালের ১৮ আগস্ট দুপুরে কাউসারের বাসার কাছে সীমানা দেয়ালঘেরা একটি জমির মাটি খুঁড়ে তার দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। জিনস প্যান্ট ও গেঞ্জি দেখে কাউসারের দেহাবশেষ শনাক্ত করেন তার স্বজনেরা।
আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায়, অপহরণের পরপরই চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগে কাউসারকে অচেতন করা হয়। পরদিন বিকেলে চেতনা ফিরে এলে আবারও চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। রাতে সে জেগে উঠলে জামির ও ফরিদা তার পা চেপে ধরে এবং আলতাফ বুকের ওপর বসে শাহজাহানকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২০
কেআই/জেডএস