সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন এ রিট আবেদন করেছেন। ‘ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮% নকল’ শিরোনামে গত ২১ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) তিনি জানান, রিট আবেদনের ওপর আগামী ২৬ জানুয়ারি শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
রিট আবেদনে পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভের (থিসিস) অনুমোদনের আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র (এনওসি) নেওয়ার বিধান করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।
শিক্ষা সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানকে রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে।
ওই প্রত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ৯৮ শতাংশ হুবহু নকল পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভের (থিসিস) মাধ্যমে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীর। এই গবেষণার সহ-তত্ত্বাবধায়ক অভিযোগ করেছেন, একাধিকবার অনুরোধ করলেও লুৎফুল কবীর তাকে থিসিসের কোনো কপি দেননি।
আবুল কালাম লুৎফুল কবীর বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বে আছেন।
২০১৪ সালের দিকে ‘টিউবারকিউলোসিস অ্যান্ড এইচআইভি কো-রিলেশন অ্যান্ড কো-ইনফেকশন ইন বাংলাদেশ: অ্যান এক্সপ্লোরেশন অব দেওয়ার ইমপ্যাক্টস অন পাবলিক হেলথ’ শীর্ষক ওই নিবন্ধের কাজ শুরু করেন আবুল কালাম লুৎফুল কবীর। তার এই গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আবু সারা শামসুর রউফ আর সহ-তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক।
গবেষণায় ৯৮ শতাংশ হুবহু নকলের বিষয়টি নজরে আসার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে একজন গবেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের কাছে বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া লুৎফুল কবীরের অভিসন্দর্ভে নিজের একটি গবেষণা থেকে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ ও তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে একটি চিঠি দিয়েছেন সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোনাস নিলসন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গবেষণার চৌর্যবৃত্তি শনাক্ত করার বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় সফটওয়্যার টার্নইটইনের মাধ্যমে অভিসন্দর্ভটি যাচাই করে দেখা গেছে, ২০১২ সালে রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী-গবেষকের জমা দেওয়া একটি ‘স্টুডেন্ট পেপারস’-এর সঙ্গে লুৎফুল কবীরের নিবন্ধের ৯৮ শতাংশ হুবহু মিল রয়েছে।
এটিসহ মোট ১৭টি জার্নাল, আর্টিকেল ও গবেষণাপত্রের সঙ্গে নিবন্ধটির বিভিন্ন অংশের উল্লেখযোগ্য মিল পাওয়া গেছে, যেগুলোর সবই লুৎফুল কবীরের অভিসন্দর্ভের আগে প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩,২০২০
ইএস/এমএ