মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুইপক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতে শিশু জাইমা নেওয়াজের বাবার কাছে এ পে-অর্ডার হস্তান্তর করা হয়।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং শিশুটির বাবার করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৭ অক্টোবর এমভি ইয়াদ লঞ্চের ধাক্কায় পায়ের পাতা কাটা পড়া শিশু জাইমার চিকিৎসার জন্য ১৫ দিনের মধ্যে তিন লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
একইসঙ্গে তার চিকিৎসাসহ তার পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আনিসুল হাসান ও শাহীনুজ্জামান শাহীন।
শাহীনুজ্জামান বলেন, এ আদেশের বিরুদ্ধে তারা আপিল বিভাগে আবেদন করে বিফল হন। এমনকি ফের তারা হাইকোর্টেও আবেদন করেছিলেন। এরপর আজ তারা তিন লাখ টাকার পে-অর্ডার দেন।
লঞ্চ মালিকের আইনজীবী এম মিজানুর বলেন, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক শিশুর বাবার হাতে তিন লাখ টাকার পে-অর্ডার তুলে দেওয়া হয়েছে।
একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পালিয়ে বেড়াচ্ছেন লঞ্চ দুর্ঘটনায় পা হারানো শিশু জাইমার পরিবার’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে গত বছর এ রিট করা হয়।
রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন- নৌপরিবহন সচিব, বাংলাদেশ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান, নৌ অধিদফতরের মহাপরিচালক, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, লঞ্চের মালিক মামুন অর রশিদ, প্রথম শ্রেণীর মাস্টার আব্দুর রউফ, দ্বিতীয় শ্রেণীর মাস্টার নাসির উদ্দিন গাজী, দ্বিতীয় শ্রেণীর চালক মো. স্বপন, তৃতীয় শ্রেণীর চালক মো. ফারুক হোসেন ও ম্যানেজার মনিরুজ্জামান।
২০১৮ সালের ২২ মার্চ প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের একটি অংশে বলা হয়, গত বছর (২০১৭ সালের) ২৯ ডিসেম্বর ছয় বছরের শিশুকন্যা জাইমা নেওয়াজ জিসা, বাবা জামাল গাজী, মা নাজমুন নাহার ও ছেলে খাঁজা গরীবে নেওয়াজকে নিয়ে ঢাকা থেকে আমতলীতে আসার উদ্দেশ্যে ফতুল্লা লঞ্চঘাটে আসেন। এমভি ইয়াদ লঞ্চটি ফতুল্লা ঘাটে এসে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে শিশু জাইমা ছিটকে গিয়ে লঞ্চ ও লঞ্চঘাটের মাঝখানে ডান পা আটকে যায়। শিশু জাইমার ওই পায়ের পাতার সম্মুখভাগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাৎক্ষণিক শিশু জাইমাকে উদ্ধার করে ঢাকা জেনারেল অ্যান্ড অর্থোপেটিক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে ২১ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরে সে। এ ঘটনায় শিশু জাইমার বাবা জামাল গাজী বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি লঞ্চ মালিক মামুন অর রশিদসহ ৬ জনকে আসামি করে দক্ষিণ কোরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে মামলা দায়ের পর থেকে শিশুর বাবা জামাল গাজীকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য লঞ্চ মালিক ও তার লোকজন প্রাণনাশের হুমকি, বাচ্চা অপহরণ ও এসিড ছুড়ে সপরিবার মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন শিশুর পরিবার। এ ঘটনায় আমতলী উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সরোয়ার হোসেনের আদালতে শিশুর মা নাজমুন নাহার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
আনিসুল হাসান বলেন, ঘটনার সময় ওই শিশু বয়স ছিলো ৬ বছর।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০
ইএস/এএটি