মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি।
আইনজীবী পঙ্কজ কুমার কুণ্ডুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী।
সেমিনার শেষে নৃত্যকলায় মেডিয়েশন শীর্ষক ডান্স ড্রামা পরিবেশন করে ভারতীয় শিল্পীরা। নৃত্য-কলায় মেডিয়েশন অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন ভারতের সার্টিফায়েড মেডিয়েটর তনুশ্রী রায়।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস।
বক্তব্যে আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, মেডিয়েশন বা মধ্যস্থতা প্রক্রিয়ায় কোনো বিরোধ নিষ্পত্তি হলে সেখানেই বিরোধের সমাপ্তি ঘটে। কিন্তু আদালত কেন্দ্রিক বিচার ব্যবস্থায় নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আপিল বিষয়ক পর্যায় থাকে। যার ফলে বিরোধ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হয়। দেশে বর্তমানে ৩৫ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন। মামলার আধিকতার এমন প্রেক্ষাপটে বলতেই হয়, ‘জাস্টিস ইস বাউন্ড টু ডিলেইড। তাই এক্ষেত্রে বলা যায় মেডিয়েশন বা মধ্যস্থতায় বিরোধ নিষ্পত্তি হতে পারে এক অনন্য মাধ্যম।
মূল প্রবন্ধে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল বলেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ মোতাবেক সব নাগরিক আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারি যা নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার। কিন্তু বাস্তব সত্য হলো, এদেশের বেশিরভাগ নাগরিক আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত। কেননা আদালত কেন্দ্রিক আমাদের বিচার ব্যবস্থা এতো জটিল এবং প্রচুর সময় অর্থ সাপেক্ষ যে, সাধারণ মানুষ আদালতের দরজায় পৌঁছাতেই পারে না। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না বর্তমানে আমাদের যে, আদালত কেন্দ্রিক বিচারব্যবস্থা তা শুধুমাত্র হাতেগোনা কিছু সুবিধাভোগী শ্রেণির এবং আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান জনগণের জন্য। এমনকি ৩০ লক্ষাধিক মামলায় ভারাক্রান্ত আদালত থেকে সেই হাতেগোনা মানুষও সময়মতো বিচার পাচ্ছেন না। এমন একটি অবস্থায় আমি মনে করি, বিরোধ নিষ্পত্তিতে মেডিয়েশন বা মধ্যস্থতা পদ্ধতি সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ও উত্তম পদ্ধতি হিসেবে জনগণের আইনের সমান অধিকার প্রাপ্তিতে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
ইএস/আরবি/