ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

রিফাত হত্যা

আদালতে এসেছেন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান

মুশফিক সৌরভ ও শফিকুল ইসলাম খোকন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০
আদালতে এসেছেন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান প্রাইভেটকারে আদালত প্রাঙ্গণে ঢুকছেন বিচারক, ছবি: বাংলানিউজ

বরগুনা: বরগুনার আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত ওরফে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা হবে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর)। এরই মধ্যে আদালতে প্রবেশ করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।

এ রায়কে কেন্দ্র করে আদালত পাড়ায় কড়া নিরাপত্তা বলয় রয়েছে।  
লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডে রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ১০ আসামির কি বিচার হয়, তা দেখার অপেক্ষায় আছেন বরগুনাসহ সারাদেশের জনগণ।  

সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে আইনজীবীর জামিনে থাকা মিন্নি তার বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের মোটরসাইকেলে করে আদালত প্রাঙ্গণে এসেছেন।  

এদিকে, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামি রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বী আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, মো. মুসা, আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বী, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুনকে আদালতে হাজির করা হবে।

এর আগে এ মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি করা হয়েছে রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে। শেষ পর্যন্ত কী আছে মিন্নির ভাগ্যে, এর উত্তর জানতে জনমনে কৌতুহলের শেষ নেই।

২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। এ সময় মিন্নি তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেন। পরে একই দিন দুপুরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রিফাত।  

এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে মিন্নির প্রশংসা করেন অনেকেই। এরপর ২৭ জুন রিফাতের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় মিন্নিকে সাক্ষী করা হয়। কিন্তু পরে তদন্তে এ হত্যায় মিন্নির জড়িত থাকার বিষয়টি তুলে আনে পুলিশ। পরে মিন্নিকে সাক্ষী থেকে মামলার সাত নম্বর আসামি করা হয়।  
 
মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আমরা শুরু থেকেই বলেছি, মিন্নি নির্দোষ। মিন্নির স্বামী রিফাত শরীফ তার বাবার কাছে মৃত্যুর আগে যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তাতে এমন কিছু কথা বলে গেছেন, যার একমাত্র সাক্ষী মিন্নি। রিফাত শরীফ মৃত্যুর আগেও বলেছেন, মিন্নি তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে এবং সে সাক্ষী। কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে আসামি করেছেন। মিন্নির বিরুদ্ধে যেসব যুক্তিতর্ক ও তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়েছে, আমরাও মিন্নিকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য সব তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেছি। আশা করি, মিন্নি এ মামলা থেকে অব্যাহতি পাবেন। তারপর আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটা আমরা মেনে নেব।  

তিনি আরো বলেন, মিন্নির বিরুদ্ধে আদালত রায় দিলে অন্য আসামিদের সঙ্গে মিন্নিকেও কারাগারে যেতে হবে। সেই সঙ্গে উচ্চ আদালতে মিন্নির আপিল করার সুযোগ থাকবে।  

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এম মজিবুল হক কিসলু বলেন, এ মামলায় আট আসামি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। মিন্নি নিজেও রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা বলে জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া মোবাইল ফোন রেকর্ড ও মিন্নির সঙ্গে নয়ন বন্ডের বিয়ে ও গোপন সম্পর্কের বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়েছে। এ মামলার অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারী মিন্নি। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ আশাবাদী, আদালত এ মামলায় মিন্নিকে অভিযুক্ত করে রায় দেবেন।

আরও পড়ুন>>>

***রিফাত হত্যা: নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় চলছে পুলিশের প্রস্তুতি
**রিফাত হত্যা: আদালত পাড়ায় কঠোর নিরাপত্তা
**বাবার মোটরসাইকেলে আদালতে মিন্নি
**আদালতপাড়ায় রিফাতের বাবার প্রতিবাদী অনশন
**রিফাত হত্যার রায় শোনার জন্য অপেক্ষায় স্বজন-স্থানীয়রা
**আদালতে আনা হলো রিফাত হত্যার আসামিদের

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।