ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার আদেশ স্থগিত চায় ব্র্যাক ব্যাংক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২০
জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার আদেশ স্থগিত চায় ব্র্যাক ব্যাংক

ঢাকা: পাটকল শ্রমিক জাহালমকে আসামি করে ঋণ জালিয়াতির ২৬ মামলায় জড়ানোর ঘটনায় তাকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।

সোমবার (১৯ অক্টোবর) বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়ে আইনজীবী আনিসুল হাসান বলেন, গত সপ্তাহে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে এ আবেদন (সিএমপি) করা হয়েছে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রায়ে ওই আদেশ দিয়েছিলেন।

রায়ের অনুলিপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংকে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ টাকা পরিশোধের এক সপ্তাহের মধ্যে তা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ব্যাংক ঋণ সংক্রান্ত মামলায় পুনরায় শুরু হওয়া তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করে তা নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া এ ঘটনায় দুদকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে করা বিভাগীয় মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি ক্ষতিপূরণ বিষয়ে জারি করা রুলের ওপর শুনানি সম্পন্ন হয়েছিল।

গত বছরের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না...’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত।

এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। এছাড়া রুলও জারি করেন আদালত।

পরে একই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজিরের পর হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন এবং দুদকের কাছে ঘটনার বিষয়ে হলফনামা আকারে জানতে চেয়েছেন। সে আদেশ অনুসারে দুদক হলফনামা আকারে তা উপস্থাপন করেন।

পরে জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফ আই আর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট এবং সকল ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দেন।

এর ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট গত ১৭ এপ্রিল জাহালম কাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতিবেদন চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে এসব মামলায় দুদক, ব্র্যাক ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।

জাহালম নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘স্যার, আমি জাহালম। আমি আবু সালেক না…আমি নির্দোষ। ’ আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ানো লোকটির বয়স ৩০-৩২ বছরের বেশি না। পরনে লুঙ্গি আর শার্ট। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বিচারকের উদ্দেশে তাকে বারবার বলতে দেখা যায়, ‘আমি আবু সালেক না। ’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন এই জাহালম। তিনি পেশায় পাটকল শ্রমিক।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২০
ইএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।