ঢাকা, শনিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় ২ সপ্তাহে তদন্ত শেষ হচ্ছে, হাইকোর্টে রাষ্ট্রপক্ষ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২০
রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় ২ সপ্তাহে তদন্ত শেষ হচ্ছে, হাইকোর্টে রাষ্ট্রপক্ষ

ঢাকা: সিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হান উদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলার তদন্ত দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ হচ্ছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এরপর সোমবার (২ নভেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে করা রিট আবেদন ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী। আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহী।

সোমবার আদালতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমাকে জানিয়েছেন দুই সপ্তাহের মধ্যে ওনারা (তদন্তকারী কর্মকর্তা) চার্জশিট দিয়ে দেবেন। অ্যাজ আর্লি অ্যাজ পসিবল টাইমের মধ্যে দিয়ে দেবেন। এরপর আদালত মুলতবি করেন। এর আগে ওই ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত এবং ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করেন আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহী।

এছাড়া নিরপেক্ষ তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে আরেকটি রিট করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ। সেটি অন্য বেঞ্চে বিচারাধীন। ওই রিটে পক্ষভুক্ত হতে রোববার আবেদন করেছেন রায়হানের মা সালমা বেগম।

রায়হান উদ্দিন সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে। তার তিন মাস বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। নগরের রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে কাজ করতেন তিনি।

গত ১১ অক্টোবর সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে গুরুতর আহত হন রায়হান। তাকে ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে গুরুতর আহত অবস্থায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির সেই সময়ের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেকে এলাহীসহ পুলিশ সদসরা। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান রায়হান। এ ঘটনার পর গত ১৩ অক্টোবর  আশেকে এলাহীসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।  

ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, নগরের কাস্টঘরে গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হন। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সিলেট কোতোয়ালি থানাধীন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান।

এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সিলেট মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর ও এএসআই আশেকে এলাহীসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে।

পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে পিবিআই। পরে মরদেহ কবর থেকে তুলে পুনঃময়নাতদন্ত করা হয়। রায়হানের দেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন মেলে ফরেনসিক রিপোর্টে।
এরই মধ্যে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই আকবর পলাতক থাকলেও পুলিশ হেফাজতে থাকা কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে ২০ অক্টোবর ও হারুনুর রশিদকে ২৪ অক্টোবর এবং ২৮ অক্টোবর এএসআই আশেকে এলাহী গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
এছাড়া ২২ অক্টোবর এসএমপি কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে বদলি করা হয়।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২০
ইএস/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।