কুষ্টিয়া: খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বক্তব্য শুনে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছেন মিঠুন ও নাহিদ।
পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে রোববার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-০৩ এর বিচারক দেলোয়ার হোসেনের আদালতে তারা দোষ স্বীকার করে এ জবানবন্দি দেন।
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর মামলার দুই আসামি মাদ্রাসাছাত্র আবু বক্কর ওরফে মিঠুন (১৯) ও সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদকে (২০) এর আগে রোববার দুপুর ২টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দি শেষে বিকেল সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
এ নিয়ে এ মামলায় গ্রেফতারকৃত চার আসামি দু’দিনে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে মামলার প্রধান দুই আসামি মাদ্রাসাছাত্র আবু বক্কর ওরফে মিঠুন ও সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের কথা স্বীকার করেন। তারা মামুনুল হক ও ফয়জুলের বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের সিদ্ধান্ত নেন। ভাঙচুরের ঘটনার দুই/তিনদিন আগে ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন তারা।
তারা কুষ্টিয়ার জুগিয়া এলাকার মাদ্রাসা ইবনে মাসউদ (রা.) এর হেফজ বিভাগের ছাত্র।
মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা কুষ্টিয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) নিশিকান্ত সরকার জানান, শহরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানেরর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত চারজনকে (মাদ্রাসার দুই ছাত্র ও দুই শিক্ষক) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) তৎসহ ৪২৭/৩৪ ধারায় মামলায় আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত মঙ্গলবার (০৮ ডিসেম্বর) রিমান্ড শুনানি শেষে মাদ্রাসার দুই ছাত্রের পাঁচদিন এবং দুই শিক্ষকের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তাদের মধ্যে চারদিনের রিমান্ড শেষে শনিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেনের খাস কামরায় মাদ্রাসার দুই শিক্ষক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা হলেন মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে মো. আল আমীন (২৭) এবং পাবনা জেলার দিয়াড় বামুন্দি গ্রামের আজিজুল মণ্ডলের ছেলে মো. ইউসুফ আলী (২৭)।
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে দুপুরে দুই ছাত্রকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ২টার দিকে দুর্বৃত্তরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন। পরে ঘটনাস্থলে থাকা সিসিটিভির ফুজেট সংগ্রহ করে পুলিশ। পরদিন শনিবার (০৫ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই মাদ্রাসার দুই ছাত্রকে ও তাদের সহযোগী দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২০
এসআই