ঢাকা: মাদক মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত শাহাবুদ্দিন বিহারির পরিবর্তে আসামি হিসেবে প্রায় পাঁচ বছর ধরে কারাগারে থাকা আরমানকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এছাড়া পল্লবী থানার সাবেক চার পুলিশ সদস্যকে চলতি দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে যুক্ত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চার কর্মকর্তা হলেন- পল্লবী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির ও মো. নজরুল ইসলাম এবং সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম খান ও মো. রাসেল।
ক্ষতিপূরণ ও পুলিশের চার সদস্যকে চলতি দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার বিষয়ে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশারকে বলা হয়েছে।
এছাড়া আরমানকে বেআইনি আটকের ঘটনায় দায় নিরূপনে নতুন করে তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা নিযুক্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়ে তিন মাসের মধ্যে তদন্ত করে পিবিআইয়ের উপ-মহাপরিদর্শককে (ডিআইজি) আগামী ১১ এপ্রিল আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ এম রাসেল চৌধুরী।
সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় ২৬ মামলার ভুল আসামি পাটকল শ্রমিক জাহালম প্রায় তিন বছর কারাভোগের পর উচ্চ আদালতের নজরে আনার পর মুক্তি পান। একটি জাতীয় দৈনিকে গত ১৮ এপ্রিল এ রকম আরেক জাহালমের ঘটনা প্রকাশিত হয়। মাদক মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত শাহাবুদ্দিন বিহারির পরিবর্তে আসামি হিসেবে কারাগারে ‘নির্দোষ’ আরমান।
প্রকাশিত এ প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন আরমানের মা বানু। পরে ২০১৯ সালের ৯ জুলাই হাইকোর্ট রুল জারি করেন। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করা হয়।
ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, পল্লবীর বেনারসি কারিগর মো. আরমান নির্দোষ হয়েও ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে কারাভোগ করছেন। রাজধানীর পল্লবী থানার একটি মাদক মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাদককারবারি শাহাবুদ্দিন বিহারি এ মামলার প্রকৃত আসামি। কিন্তু ওই পরিচয়ে তার পরিবর্তে সাজাভোগ করছেন আরমান।
শুধু বাবার নামে মিল থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে শাহাবুদ্দিন নামে আদালতে সোপর্দ করেছে বলে জোর অভিযোগ করেছে তার পরিবার। অন্যদিকে প্রকৃত আসামি শাহাবুদ্দিন কারাগারের বাইরে দিব্যি মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন।
** কারাবন্দি সেই আরমান সংশ্লিষ্ট মামলার নথি তলব
বাংলাদেশ: ১৫২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
ইএস/আরবি