ঢাকা: নির্ধারিত সময়ে বিচার শেষ না হলে তার কারণ উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট ও সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন দিতে হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের এমন বিধান প্রতিপালনে ২০১৬ সালের হাইকোর্টের আদেশ ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের সার্কুলার জারির পরও সংশ্লিষ্টরা এমন প্রতিবেদন দিচ্ছে না।
ওই বিধান প্রতিপালনে দ্বিতীয় বারের মতো সার্কুলার জারি করেছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
আইনের ২০ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, বিচারের জন্য মামলা প্রাপ্তির তারিখ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল বিচারকার্য শেষ করবে।
আইনের ৩১ ক (১) ধারায় বলা হয়েছে, কোন মামলা ধারা ২০ এর উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি না হওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালকে তার কারণ লিখে একটি প্রতিবেদন ত্রিশ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের নিকট দাখিল করতে হবে, যার একটি অনুলিপি সরকারের কাছে পাঠাতে হবে।
(২) অনুরূপ ক্ষেত্রে পাবলিক প্রসিকিউটর ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকেও তার কারণ লিখে একটি প্রতিবেদন ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকারের নিকট দাখিল করতে হবে, যার একটি অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টে পাঠাতে হবে।
(৩) উপ-ধারা (১) বা (২) এর অধীন পেশকৃত প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর যথাযথ কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।
এর মধ্যে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মিলাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি একটি মামলা করা হয়। ঘটনার দিনই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আইনানুযায়ী বিচারের জন্য যাওয়ার পর মামলাটি ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০১৬ সালে আসামি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। তখন শুনানিকালে আইনের ৩১(ক) ধারায় ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়। ওই বছরই হাইকোর্ট এ বিধান পালনে নির্দেশ দেন।
পাশাপাশি একই বছরে এ বিধান পালনে সার্কুলার জারি করেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। ৪ বছর পরে এসে ফের একই বিষয়ে সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
গত ২৭ ডিসেম্বর জারি করা সার্কুলারে বলা হয়, বিধানটি প্রতিপালন না হওয়ায় তা আবশ্যকিভাবে প্রতিপালন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়ে ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর সার্কুলার জারি করে।
সুপ্রিম কোর্টের গোচরীভূত হয়েছে যে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩১ক ধারা আবশ্যিকভাবে প্রতিপালন করার জন্য ওই সার্কুলার জারি করা হলেও সংশ্লিষ্ট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থেকে আইনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণ লিপিবদ্ধ করে প্রতিবেদন নিয়মিতভাবে সুপ্রিম কোর্টে প্রেরণ করা হচ্ছে না।
এছাড়া ওই বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারাও তার কারণ লিপিবদ্ধ করে ৩০ দিনের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে তার অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টে নিয়মিতভাবে পাঠাচ্ছেন না। এ অবস্থায় ৩১ক ধারার বিধান আবশ্যিকভাবে প্রতিপালন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে পুনরায় নির্দেশ দেওয়া হলো।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২১
ইএস/এমজেএফ