ঢাকা: প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা পাচার করার অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদার ইস্যুতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম খানকে বিদেশ যাওয়ার ওপর হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে নজরুল ইসলাম খানের আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (২৪ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন।
ফলে তার বিদেশযাত্রায় আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন। দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান।
পিপলস লিজিংয়ের ৫ আমানতকারীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জানুয়ারি পিকে হালদারের মা লীলাবতী হালদারসহ ২৫ জনের বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। ওই ২৫ জনের মধ্যে মো. নজরুল ইসলাম খানও (এনআই খান) ছিলেন।
ওইদিন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসে জমা রাখা টাকা ফেরত পেতে হাইকোর্টে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতির পরিবার, সাবেক রাষ্ট্রদূত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কর্মকর্তাসহ পাঁচজন। তারা তাদের বক্তব্যে বলেছেন, এ ২৫ জন ব্যক্তিকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে পিকে হালদার বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যেতে পারে। তারা যেন বিদেশ যেতে না পারেন, এজন্য তারা হাইকোর্টের নির্দেশনা চান। আদালত বলেছেন দুদক প্রয়োজনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। আর আদালতের অনুমতি ছাড়া এ ২৫ জন বিদেশে যেতে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছেন।
পাঁচ আবেদনকারী হলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামালের মেয়ে ড. নাশিদ কামাল, সাবেক রাষ্ট্রদূত রাজিউল হাসান, সামিয়া বিনতে মাহবুব, খালেদ মনসুর ট্রাস্টের কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের সাবেক পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকতুর রহমান।
ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন মো. নজরুল ইসলাম খান।
১৮ নভেম্বর দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর তাকে বিদেশ থেকে ফেরাতে এবং গ্রেফতার করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
৩ জানুয়ারি এ স্বপ্রণোদিত মামলার শুনানিতে দুদক আইনজীবী আদালতের কাছে এসব আমানতকারীর কথা তুলে ধরেন এবং তারা আদালতের সামনে কথা বলার অনুমতি চান।
এরপর তারা আদালতের অনুমতি নিয়ে তাদের আমানত ফিরে পেতে আকুতি জানান। ওইদিন আদালত তাদের বক্তব্য লিখিত আকারে দিতে বলেন। সে অনুসারে ৫ জানুয়ারি মঙ্গলবার তারা লিখিত বক্তব্য জমা দেন এবং ২৫ জনের তালিকা দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২১
ইএস/এএ