ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

দুদকের মামলায় ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২১
দুদকের মামলায় ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

রাজশাহী: রাজশাহীতে অগ্রণী ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে দুদকের মামলায় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে এর ওপর শুনানি হয়।

পরে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন রাজশাহীর জেলা ও দায়রা জজ আদলতের বিচারক মীর শফিকুল আলম।

অগ্রণী ব্যাংকের ওই কর্মকর্তার নাম আহসান হাবীব নয়ন। তিনি অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী ডিজিএমের কার্যালয়ে প্রিন্সিপ্যাল অফিসার পদে কর্মরত। তার বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর বহরমপুর ব্যাংক কলোনি এলাকায়।

এর আগে তিনি অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহীর গোদাগাড়ী শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন। ওই শাখা থাকাকালে তার বিরুদ্ধে গ্রাহকের ছয় লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। পরে এ নিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলাটি করা হয়।

দুদকের রাজশাহীর এ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আল-আমিন মামলার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এর আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকের রাজশাহী শাখা এবং অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের তদন্তে গ্রাহকের টাকা তুলে নেওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। পরে দুদক এ বিষয়ে অনুসন্ধান চালায়। সত্যতা পেলে ব্যাংক কর্মকর্তা নয়নের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার বিবরণীতে বলা হয়, সাবের আলী তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স সাবের আলী ট্রেডার্স’ এর অগ্রণী ব্যাংকে অনুকূলে একটি ১০ লাখ টাকার এসএমই সিসি (হাইফো) ঋণ সুবিধা ভোগ করছেন। তার হিসাব নম্বর-০২০০০০৯৫৭৭৫৯৪। সাবের আলী ২০১৯ সালের ২০ আগস্ট নিজে ব্যাংকে গিয়ে ১০ লাখ টাকার একটি চেক দিয়ে টাকা তোলেন।

সেদিন তিনি তার ব্যাংক হিসাবের স্থিতি জানতে চান। ব্যাংক থেকে তার ঋণ হিসাবের স্থিতি জানানো হয়। তখন তিনি ছয় লাখ টাকার গড়মিল দেখতে পান। এরপর তিনি ব্যাংকের ঋণ হিসাব বিবরণী যাচাই করে দেখেন, ২০১৯ সালের ১৬ জুন তার ৪৩০৮১৭২ নম্বরের একটি চেকের মাধ্যমে ছয় লাখ টাকা তোলা হয়েছে।

দুদক অনুসন্ধান করে দেখেছে, ছয় লাখ টাকা উত্তোলনের এক সপ্তাহ আগে তৎকালীন ব্যবস্থাপক নয়ন গ্রাহক সাবের আলীকে অবহিত করেন যে, তার ঋণ হিসাবটি শূন্য করার জন্য একটি ফাঁকা চেক প্রয়োজন। এ জন্য নয়ন ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরী আফজাল হোসেনকে ১৬ জুন সাবের আলীর বাড়িতে পাঠান।

সরল বিশ্বাসে তিনি ওই চেকটি দিয়েছিলেন। নিরাপত্তা প্রহরী চেকটি এনে শাখা ব্যবস্থাপক নয়নকে দেন। এরপর নয়ন চেকে নিজ হাতে ছয় লাখ টাকার পরিমাণ লেখেন। ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার আবু বকর সিদ্দিক চেকের প্রথম ক্যানসেলেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকলেও তাকে এড়িয়ে নয়ন নিজেই চেক ক্যানসেলেশন করে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কাউন্টারে গিয়ে ক্যাশ কর্মকর্তা আকতারুজ্জামানকে চেকটি দিয়ে টাকা তার কক্ষে আনতে বলেন।

আকতারুজ্জামান চেকটি সিডি ইনচার্জ আবু বকর সিদ্দিকের হাতে দেন। এ সময় আবু বকর সিদ্দিক চেকটি কম্পিউটারে পোস্টিং করে ক্যানসেলেশন করে আবার আকতারুজ্জামানকে দেন। এরপর আকতারুজ্জামান চেকটি ক্যাশ করে ছয় লাখ টাকা ব্যাংকের তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক নয়নের কক্ষে গিয়ে তাকে বুঝিয়ে দেন। এভাবে নয়ন গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেন।

পরে অগ্রণী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে তার অপরাধ প্রমাণ হলে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি তিনটি জমা ভাউচারে সাবের আলীর হিসাবে ছয় লাখ টাকা ফেরত দেন। টাকা ফেরত দিয়ে তিনি নিজেই তার অপরাধকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বলে দুদক মনে করে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২১
এসএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।