ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ভয়ভীতি দেখানোর সাজা ভালো ব্যবহার-বৃক্ষরোপণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২১
ভয়ভীতি দেখানোর সাজা ভালো ব্যবহার-বৃক্ষরোপণ

ঢাকা: ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত আলোচনার জেরে দেওয়ান প্রোপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদ দেওয়ান ছিদ্দিককে ভয়ভীতি দেখানোর মামলার রায়ে তিন আসামিকে সাজা হিসেবে ভালো ব্যবহার ও গাছ রোপণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।  

সোমবার (২২ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মাহমুদা আক্তার আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- দেওয়ান প্রোপার্টিজ লিমিটেডের আরেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুয়েল হোসেন দেওয়ান, মানিক হোসেন দেওয়ান এবং মুজাহিদুল ইসলাম।

আসামিদের অপরাধের শাস্তির পরিবর্তে প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে ছয় মাস সময়কালের জন্য এই সাজা দেন আদালত। রায়ে বলা হয়- এসময় আসামিরা কোনোরূপ অপরাধে জড়িত হবেন না বা একই ধরনের অপরাধ আর করবেন না। পক্ষদ্বয় শান্তি বজায় রাখবেন ও ভালো ব্যবহার করবেন। তাদের মধ্যে বিদ্যমান বিরোধ আপস-মীমাংসার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করবেন। আদালত ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা তলব করলে যথাসময়ে উপস্থিত হবেন। প্রবেশনকালীন আসামিরা পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল হিসেবে ১০টি গাছ (৫টি বনজ ও ৫টি ফলজ) রোপণ করবেন।

প্রবেশনের সময় আসামিরা এসব শর্ত ভঙ্গ করলে বা তাদের আচরণ সন্তোষজনক না হলে প্রবেশন আদেশ বাতিল হবে বলে বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন। অপরাধের শাস্তি হিসেবে ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন, সাক্ষ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঘটনার দিন ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত আলোচনার জের ধরে বাদী ও আসামি জুয়েল হোসেন দেওয়ানের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে বাদীর হাতে থাকা মোবাইল সেটটি ভেঙে যায়। আসামিরা চিৎকার চেঁচামেচি করেন ও বাদীকে হুমকি দেন।

মামলার বিষয়বস্তু থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বাদী ও আসামিরা পরস্পর ঘনিষ্ঠ এবং ঘটনাটি ঘটেছিল তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে। পারিবারিক বিরোধের এক পর্যায়ে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আসামিরা এমন কাজ করেছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। ক্ষণিকের উত্তেজনা লঘু অপরাধ মর্মে বিবেচিত হয়। তাই লঘু অপরাধের দায়ে আসামিদের কারাগারে না রেখে প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে এবং শর্তসাপেক্ষে তার পরিবার ও সামাজিক পরিবেশে রেখে অপরাধের শোধন ও সামাজিকভাবে একীভূতকরণের সুযোগ দেওয়া সমীচীন মর্মে বিবেচিত হয়।  

মামলাটি আপসযোগ্য অপরাধ এবং দুই পক্ষ পরস্পর আত্মীয়। সাজা দেওয়ার অন্যতম উদ্দেশ্য সংশোধনমূলক, প্রতিহিংসামূলক নয়। সাজার এই আদর্শিক বিষয় বিবেচনায় রেখে আসামিদের বয়স, পক্ষদ্বয়ের মধ্যকার সম্পর্ক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনায় আসামিদের সৎ, পরিশ্রমী ও আইন মান্যকারী নাগরিক হিসেবে পুনর্বাসনের জন্য শর্তসাপেক্ষে নির্দিষ্ট শর্তে প্রবেশন অফিসারের অফিসারের নিয়ন্ত্রণে প্রবেশন সমীচীন মনে হয়।

ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত আলোচনার জেরে ভয়ভীতি দেখানো ও মোবাইল ভাঙার ঘটনায় দেওয়ান প্রোপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদ দেওয়ান ছিদ্দিক ২০১৭ সালের ৬ জুন কাফরুল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। মামলাটি তদন্ত করে একই থানার এসআই হোসনা আফরোজ ওই বছরের ১৮ জুলাই তিনজনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২১
কেআই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।