ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ছাত্র অধিকার পরিষদ নেতা ইয়ামিনসহ দু’জন রিমান্ডে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২১
ছাত্র অধিকার পরিষদ নেতা ইয়ামিনসহ দু’জন রিমান্ডে

ঢাকা: ঢাকা মেডিক্যাল থেকে এক আসামিকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলাম রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া অপর দু’জন হলেন- সংগঠনটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ক্রীড়া সম্পাদক আরেফিন হোসেন।

এদিন এ দু’জনসহ মোট তিনজনকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) রমনা জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম খান।

অপরদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম, খাদেমুল ইসলাম ও মো. পারভেজ রিমান্ড বাতিল পূর্বক জামিন আবেদন করেন। জামিন শুনানিতে তারা বলেন, বাড্ডায় ভিপি নুরের সঙ্গে একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে মানুষের জমায়েত হয়। সেখানে উৎসুক জনতা হিসেবে শিপন যান। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন তিনি এবং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। এছাড়া আরেফিন শিপন এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে ব্যক্তিগত কাজে ওই এলাকায় যায়। এ মামলার এজাহারে তাদের নাম নেই এবং ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আর এজাহারভুক্ত অপর আসামি বিন ইয়ামিন মোল্লা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের মেধাবী ছাত্র। তিনি আসামিকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন এবং তখন ওই এলাকায় তিনি ছিলেন না। তাই আসামিদের রিমান্ড বাতিল পূর্বক জামিনের প্রার্থনা করছি।  

রাষ্ট্রপক্ষে সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) নিজাম উদ্দিন জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে বিচারক বিন ইয়ামিন মোল্লা ও আরেফিন হোসেনের দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া তাওহিদুল ইসলাম শিপনের রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।  

একইদিনে প্রেসক্লাবের সামনে গত ২৭ মার্চ সমাবেশে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের কর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় রোকেয়া জাবেদ মায়া নামে অপর এক আসামিকে দু’দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় ডিবির রমনা জোনাল টিমের এসআই শাহজাহান মিয়া তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

অপরদিকে একই আইনজীবীরা তার পক্ষে জামিনের আবেদন করেন। জামিন শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, এ আসামি স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী একজন নারী আসামিকে জামিন অযোগ্য ধারায় জামিন দেওয়ার এখতিয়ার আদালতের আছে। তাই আমরা মানবিক বিবেচনায় নারী আসামি হিসেবে তার জামিনের প্রার্থনা করছি।

অপরদিকে সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) নিজাম উদ্দিন জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, রিমান্ডে আসামির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাই এ পর্যায়ে জামিন দেওয়া হলে তদন্তে বিঘ্ন ঘটবে। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৫ মার্চ মতিঝিল থানায় ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদ একটি মিছিল বের করে। সেই মিছিলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় আবুল কালাম আজাদ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। আটক ওই ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ চিকিৎসা দিতে নিয়ে গেলে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের কর্মীরা তাকে জোরপূর্বক পুলিশের কাছ থেকে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় একইদিনে শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন পল্টন মডেল থানার এসআই রায়হান করিব। মামলায় ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, বর্তমান সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন, ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান, সোহরাব, যুব অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আতাউল্লাহসহ মোট ১৯ জনকে আসামি করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২১
কেআই/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।