ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ভিকারুননিসা অধ্যক্ষের কথাগুলো সত্য হলে এটা নিন্দনীয়: হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২১
ভিকারুননিসা অধ্যক্ষের কথাগুলো সত্য হলে এটা নিন্দনীয়: হাইকোর্ট

ঢাকা: ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার মুকুলের ‘অডিও ক্লিপের কথাগুলো যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে এটা খুবই নিন্দনীয়, অপ্রত্যাশিত’ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার মুকুলের বিষয়ে বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা রিট আবেদনের শুনানিতে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) এমন মন্তব্য করেছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আদালত বলেছেন, একজন অধ্যক্ষের কাছে এ ধরনের কথা আশা করা যায় না।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আব্দুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। অধ্যক্ষের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুশফিক উদ্দিন বখতিয়ার।

আদালতের আদেশ অনুসারে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, পত্রিকায় খবর বের হওয়ার পরে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি।

তখন আদালত বলেন, এখন তো লকডাউন শেষ। আমরা ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করলাম। ৩০ (আগস্ট) তারিখের মধ্যে আমরা যেন একটা রিপোর্ট পাই। বিষয়টি আপনি মন্ত্রণালয়কে জানাবেন।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম এ রিট করেন। এরপর সোমবার হাইকোর্ট মন্ত্রণালয় কী পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে জানতে চেয়ে মুলতবি করেছিলেন।  

আবেদনে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের ‘অসাদাচরণ ও দুর্নীতির’ বিষয়ে তদন্ত করতে বিভাগীয় ব্যবস্থার কার্যক্রম চালু না করায় বিবাদীদের ব্যর্থতা এবং নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং বিভাগীয় ব্যবস্থার কার্যক্রম শুরু করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় একজন সিনিয়র শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে কার্যক্রম চালানো থেকে বিরত থাকতে নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন জানানো হয়েছে।

আবেদনে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে ২৭ জুলাই প্রকাশিত ‘আমি গুলি করা মানুষ পিস্তল বালিশের নিচে থাকত’ শীর্ষক সংবাদে বলা হয়, ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এবং অভিভাবক ফোরামের উপদেষ্টা মীর শাহাবুদ্দিন টিপুর একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে।

এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এতে অধ্যক্ষ ওই অভিভাবককে বলেন, ‘আমি কিন্তু গুলি করা মানুষ। রিভলবার নিয়া ব্যাগের মধ্যে হাঁটা মানুষ। আমার পিস্তল বালিশের নিচে থাকত। কোনো ... বাচ্চা যদি আমার পেছনে লাগে আমি কিন্তু ওর পেছনে লাগব, আমি শুধু ভিকারুননিসা না আমি দেশছাড়া করব। ’ ফোনালাপের অডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এছাড়া দৈনিক শিক্ষা নামে একটি অনলাইনে ‘ভিকারুননিসা ক্যাম্পাসে গরুর হাট, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ ’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ করা হয়।

এসব বিষয় উল্লেখ করে মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম ২৭ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও শিক্ষা সচিব কাছে চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি তদন্তের মাধ্যমে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তদন্তের স্বার্থে অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্তের আবেদন জানান।

কিন্তু এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন বলে জানান আইনজীবী মো. আব্দুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া।  

তিনি বলেন, অধ্যক্ষ অডিওতে যেসব কথা বলেছেন, তাতে তিনি ওই কলেজের অধ্যক্ষ পদে থাকার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন।

রিটে বিবাদী করা হয়েছে, শিক্ষা সচিব, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচলক, অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার মুকুল এবং গভর্নিং বডির সভাপতিকে।

আরও পড়ুন>>ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের ফোনালাপ ফাঁস, দাবি ষড়যন্ত্র

বাংলাদেশ সময়: ১২১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২১
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।