ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আবারও পেছালো এসকে সিনহার মামলার রায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২১
আবারও পেছালো এসকে সিনহার মামলার রায়

ঢাকা: ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে ৪ কোটি টাকা আত্মসাত ও পাচারের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ (এসকে সিনহা) ১১ আসামির মামলার রায় ফের পিছিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে এই মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল।

তবে, রায় প্রস্তুত না হওয়ায় এদিনের তারিখ পিছিয়ে ৯ নভেম্বর ধার্য করেন বিচারক।

দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ১৪ সেপ্টেম্বর এই মামলায় রায়ের জন্য ৫ অক্টোবর দিন ধার্য করেন একই আদালত। তবে, সেদিন অসুস্থতার কারণে বিচারক ছুটিতে থাকায় রায়ের জন্য ২১ অক্টোবর নতুন দিন ধার্য করা হয়।

এসকে সিনহাসহ এই মামলায় মোট আসামি ১১ জন। পলাতক থাকায় সাবেক এই প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিতেই হয় বিচারকাজ। মামলার আসামিদের মধ্যে ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী) কারাগারে। একই ব্যাংকের সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান এবং একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা জামিনে আছেন।  

অপরদিকে এসকে সিনহা, ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায় পলাতক।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২)(৩) ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে সরকারি কর্মচারী হিসেবে ক্ষমতার অপব্যববহারের মাধ্যমে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করার সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

এছাড়া মানি লন্ডারিং আইনের ৪(৩) ধারায় সর্বোচ্চ ১২ বছর, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে অপরাধের জন্য দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় সাত বছর ও দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় প্রতারণার অভিযোগে সাত বছর কারাদণ্ডের শাস্তির বিধান রয়েছে।

এর আগে, ২০১৯ সালের ১০ জুলাই ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে চার কোটি টাকা স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর আসামি শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখায় দুটি অ্যাকাউন্ট খোলে দুই কোটি টাকা করে মোট চার কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেন। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ঋণের আবেদনে উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ৫১ নম্বর বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করা হয়, যার মালিক ছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা।

জামানত হিসেবে আসামি রনজিৎ চন্দ্রের স্ত্রী সান্ত্রী রায়ের নামে সাভারের ৩২ শতাংশ জমির কথা উল্লেখ করা হয় ঋণের আবেদনে। ওই দম্পতি এস কে সিনহার পূর্ব পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ বলে উল্লেখ করা হয়েছে মামলার এজাহারে।

দুদক বলছে, ব্যাংকটির তৎকালীন এমডি এ কে এম শামীম কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই, ব্যাংকের নিয়ম-নীতি না মেনে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণ দুটি অনুমোদন করেন।

ওই বছরের ৭ নভেম্বর ঋণের আবেদন হওয়ার পর 'অস্বাভাবিক দ্রুততার' সঙ্গে তা অনুমোদন করা হয়। পরদিন মোট চার কোটি টাকার দুটি পে-অর্ডার ইস্যু করা হয় এস কে সিনহার নামে। ৯ নভেম্বর সোনালী ব্যাংকের সুপ্রিম কোর্ট শাখায় এস কে সিনহার অ্যাকাউন্টে জমা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে ক্যাশ, চেক ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে ওই টাকা উত্তোলন করা হয়। এর মধ্যে এস কে সিনহার ভাইয়ের নামে শাহজালাল ব্যাংকের উত্তরা শাখার অ্যাকাউন্টে দুটি চেকে দুই কোটি ২৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকা স্থানান্তর করা হয় ওই বছরের ২৮ নভেম্বর।

মামলা তদন্ত করে ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন দুদক পরিচালক বেনজীর আহমেদ। ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট একই আদালত ১১ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। চলতি বছর ২৪ আগস্ট মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২১
কেআই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।