ঢাকা: তিন বছরের শিশুর জিম্মা নিয়ে রিট বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তাকে নিয়ে অষ্ট্রেলিয়া চলে যাওয়া বাবা সানিউর নবীর বাংলাদেশি পাসপোর্টের কার্যকারিতা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে শিশু নিখোঁজ হয়েছে মর্মে জিডি এবং উচ্চ আদালতের আদেশ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরূপ মন্তব্য করায় শিশুটির দাদা টিআইএম নবীকে আগামী ৭ ডিসেম্বর হাজির হতে নির্দেশ ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এছাড়া আদালতের আদেশ থাকা সত্বেও শিশুকে নিয়ে দেশ ত্যাগ করায় সানিউর নবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন।
আদালতে শিশুটির মা ভারতীয় নারী সাদিকা শেখের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও আইনজীবী কাজী মারুফুল আলম।
এর আগে একটি মানবাধিকার সংগঠন হাইকোর্টে রিট করে। হাইকোর্ট প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৬ আগস্ট মাসহ শিশুটিকে হাজির করতে নির্দেশ দেন। হাজিরের পর ওই দিন শিশুটিকে মায়ের জিম্মায় দিয়ে বাবাকে সপ্তাহে তিন দিন দেখা করার সুযোগ দেন।
কাজী মারুফুল আলম বলেন, ওই আদেশের পর শিশুর কথা চিন্তা করে গুলশান ক্লাবে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। এর মধ্যে শিশুটির মায়ের বিরুদ্ধে জিডি করেন বাবা। জিডি মূলে নন এফআইআর মামলাও হয়। আর কৌশলে শিশুটিকে নিয়ে যায় বাবা। বিষয়টি আদালতে জানালে ১৫ নভেম্বর হাইকোর্ট শিশুটিকে পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে আইনজীবীর চেম্বারে হাজির করতে বলেন। কিন্তু শিশুটিকে হাজির করেনি তারা। এ কারণে আমাদের আবেদনে শিশুটিকে বিদেশ নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। আর পরের দিন ১৭ নভেম্বর আদালত ওই শিশুকে বাবাসহ ২১ নভেম্বর বিকেল তিনটার মধ্যে আদালতে হাজির করাতে পুলিশের ঢাকা মহানগর কমিশনার ও গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
কিন্তু রোববার পুলিশ জানায় শিশুটিকে নিয়ে ১৬ নভেম্বর বাবা দেশত্যাগ করেছেন। পরে আদালত আদেশের জন্য মঙ্গলবার দিন রেখেছিলেন। সে অনুসারে এদিন আদেশ দেওয়া হয়।
গত ২৬ আগস্ট আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ জানিয়েছিলেন, ২০১৭ সালে হায়দরাবাদের সাদিকা শেখ নামে এক নারীকে বিয়ে করেন বারিধারার সানিউর টি আই এম নবী। বিয়ের পর তারা মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন। কয়েক মাস পর তারা ঢাকায় ফিরে আসেন।
এরই মধ্যে ওই দম্পতির এক ছেলে হয়। কিন্তু করোনাকালে তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দেয়। এমনকি ভারতের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সাদিকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। বিষয়টি ভারতে সাদিকার আত্মীয়-স্বজনরা জানতে পারেন। এরপর সেখান থেকে তাদের পরিবারের পক্ষে প্রথমে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়। তারপরও বিষয়টি সমাধান হয়নি। পরে সাদিকার বোন মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) কাছে আইনি সহায়তা চান। এর মধ্যে সাদিকাকে ডিভোর্স দেয় নবী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২১
ইএস/এমএমজেড