ঢাকা: বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) ছিল ২২তম প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবস। এখন ২৩তম প্রধান বিচারপতি কে হবেন, তা নিয়ে আইন অঙ্গনে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে।
সংবিধান মতে প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত করার ক্ষমতা কেবল রাষ্ট্রপতির।
অ্যাটর্নি জেনারেলও বলছেন একই কথা। সংবিধান অনুসারেপ্রধান বিচারপতি নিয়োগ হবে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অবসরে যাবেন চলতি বছরের ৩০ ডিসেম্বর। ওই দিন দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতির বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হবে। সংবিধান অনুসারে বিচারপতি পদের মেয়াদ ৬৭ বছর পর্যন্ত।
কিন্তু ওই দিন অবকাশকালীন ছুটি থাকায় বুধবার প্রধান বিচারপতিকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয় অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।
বর্তমানে প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগেপাঁচজন বিচারপতি রয়েছেন। অন্যরা হলেন-বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
তাদের মধ্যে আপিল বিভাগে জ্যেষ্ঠতার ক্রম অনুসারে বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী অবসরে যাবেন ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর। বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর, বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ২০২৩ সালের ৩০ জুন এবং বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ২০২৬ সালের ১০ জানুয়ারি অবসরে যাবেন।
বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শ করিয়া রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগদান করিবেন। ’
সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদ মতে, ‘এই সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুসারে কেবল প্রধানমন্ত্রী ও ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ব্যতীত রাষ্টপতি তাঁহার অন্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন:’
আইনজীবীরা বলছেন, রেওয়াজ অনুসারে আপিল বিভাগের বিচারপতিরাই প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। সাধারণত জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিই প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। তবে বিভিন্ন সময়ে জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকে সুপারসিড (ডিঙ্গিয়ে) করে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার রেওয়াজও দেখা গেছে। এ ক্ষেত্রে সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে একজনকে নিয়োগ দেবেন।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, সংবিধান অনুসারেই রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগে জ্যেষ্ঠতা লংঘনের একটি সংস্কৃতি চলে আসছে। এটা বিচার বিভাগের জন্য অশনি সংকেত। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ এবং আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা বজায় রাখতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
ইএস/এসআই