পাথরঘাটা (বরগুনা): চারদিকের ওয়ালের পলেস্তাতারা খসে পড়ছে, মেঝে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। হঠাৎ কেউ প্রবেশ করলেই আঁতকে উঠবে, এর নাম আদালত ভবন।
দীর্ঘ এক যুগের বেশি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন না থাকায় ভাড়া ভবনে কার্যক্রম চলছে। জরাজীর্ণ এ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে বিচারক, আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টরা। বিগত কয়েক বছর ধরে নিজস্ব ভবনের জন্য দাবি করা হলেও এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি বিচারক, বিচারপ্রার্থীসহ আইনজীবীরা।
১৯৮৫ সালে এরশাদ সরকারের আমলে পাথরঘাটায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গঠন করা হয়। ওই সময় উপজেলা পরিষদের মধ্যে এ আদালতের নিজস্ব ভবন ছিল। বিভিন্ন জায়গায় প্লাস্টার খসে পড়ায় ২০০৮ সালে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। এরপরও ওই ভবনে কয়েক বছর বিচারকাজ পরিচালনা করা হয়।
২০১৪ সালের মার্চ থেকে পাথরঘাটা সরকারি কেএম পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি ভবন ভাড়া নিয়ে সেখানে আদালতের কার্যক্রম চলছে। এ ভবনটিরও ছাদের পলেস্তারা প্রায়ই খসে পড়ে। সম্প্রতি ভবনটির বারান্দার পলেস্তারার নিচ থেকে গোখরা সাপের সাতটি বাচ্চা ও সাপের প্রায় ৪০টি ডিমের খোসা উদ্ধার করা হয়। এখনো ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিচারিক কার্যক্রম। সব মিলিয়ে বিচারক, আইনজীবী থেকে শুরু করে বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। একাধিক বিচারপ্রার্থীরা জানান, আদালত ভবন খুবই জরাজীর্ণ, তাই অনেক ঝুঁকির মধ্যেই ধার্য তারিখে হাজির হতে হয়।
পাথরঘাটা পৌরসভার কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম কাকন বাংলানিউজকে বলেন, আদালত ভবন একটি নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে থাকা উচিত। দীর্ঘ বছর ভাড়া ভবনে থাকায় আদালতের নিরাপত্তার বিষয় প্রশ্নবিদ্ধ। তাই আমরা দাবি করছি খুব তাড়াতাড়ি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপ নিজস্ব আদালত ভবনের ব্যবস্থা করবেন।
এপিপি অ্যাডভোকেট মো. জাবির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ভাড়া করা আদালতের ভবনটিতে তাদের বসার জায়গা নেই। চেম্বার থেকে এসে দাঁড়িয়ে কোর্ট করে তাদের আবার চেম্বারে চলে যেতে হয়। বিচারপ্রার্থীদের এসে স্কুলের মাঠে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বৃষ্টির দিনে ছাদ থেকে পানি পড়ে অফিসের দরকারি কাগজপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। একটি আদলত ভবন এখন অতিজরুরি হয়ে পড়েছে।
বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমন বাংলানিউজকে বলেন, একটি ভবন বরাদ্দের জন্য চেষ্টা করছি। পিপিতেও নাম উঠেছে। একনেকে পাস হলেই ভবনটি নির্মাণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২১
এনটি