বছরখানেক আগে ‘অবতার’ নিয়ে বেশ সাড়া জাগিয়ে ছিলেন জেমস ক্যামেরন। থ্রি-ডি ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে এনেছিলেন নতুন মাত্রা।
জেমস ক্যামেরন সম্প্রতি ‘আর্টসবিট’-এ তার এখনকার কাজ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ডেভ ইসকফ। এর নির্বাচিত অংশ বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য।
আর্টসবিট: ‘অবতার’ নিয়ে কথা বলতে নিশ্চয়ই এখন অনেক বিরক্ত বোধ করেন?
জেমস ক্যামেরন: (খানিক হেসে) এমন অবস্থা আট মাস আগেই হয়েছিল। সত্যিই এখন এই প্রসঙ্গ এলে আমি অসার বোধ করি।
আর্টসবিট: অনেক পরিচালক প্রায়ই বলে থাকেন, ছবি মুক্তি পাওয়ার পরও আসলে ছবির অনেক কাজ বাকি থেকে যায়। তারা ছবিটিকে আরো পরিমার্জিত করতে চান। আপনার কি কখনও এমন মনে হয়েছে?
ক্যামেরন: আমার ক্ষেত্রে বিষয়টি ঠিক এমন নয়। আমরা ‘অবতার’-এর ‘এলিয়েন’দের একটা বিশেষ সংস্করণ করে নিয়েছিলাম। আমরা ‘অবতার’-কে সিনেমা হলের জন্যে যখন মুক্তি দিলাম তখন এক ধরনের ভাবনা ছিল আর যখন কালেকটর’স এডিশন হবে তখন হবে আরেক রকম।
আর্টসবিট: আপনি কি মনে করেন যে ‘অবতার’-এর সাফল্য হলিউডে থ্রি-ডি ছবি বানানোর ক্ষেত্রে এক ধরনের হিড়িক সৃষ্টি করেছে?
ক্যামেরন: আমি মনে করি, এটা থ্রি-ডি ছবি তৈরির ক্ষেত্রে এক ধরনের গতি সৃষ্টি করেছে। বছর তিনেক আগের দিকেও যদি তাকান তাহলেও অনেক থ্রি-ডি ছবির সাফল্য দেখতে পাবেন। কিন্তু ‘অবতার’ যেন এই বিষয়টিকে একটি চূড়ায় এনে দিয়েছে। এটা অস্বীকার করা যায় না যে থ্রি-ডি ছবি বানানো একটি লোভনীয় কাজ হয়ে গেছে। এক ধরনের হুড়োহুড়ি দেখা যাচ্ছে। এর ফলে বাজারে অনেক বাজে ছবিও আসছে। দর্শকদের অনেকে আবার মুখ ফিরিয়েও নিচ্ছেন। তবে আমি মনে করি, অনেক স্টুডিও ভালো কাজ হাতে নিচ্ছে।
আর্টসবিট: জর্জ লুকাচ তার ‘স্টার ওয়ারস’-এর সবগুলো সিরিজ থ্রি-ডি করে আবার বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করেছেন। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
ক্যামেরন: আমি অনেক বছর থেকেই তাকে উৎসাহ দিচ্ছি। ২০০৫ সালে জর্জ আমাকে তার ছবির কিছু অংশ দেখিয়ে ছিলেন। আমিও আমার কিছু থ্রি-ডি কাজ দেখিয়ে ছিলাম। তখন আমরা মন্তব্য করেছিলাম, থ্রি-ডির দিন আসছে। আমি ‘টাইটানিকে’ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার কথা ভাবছি। ...স্টিভেন স্পিলবার্গ তার কিছু ছবিতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারতেন, যেমনটি আমরা করেছি। আমার বিশ্বাস থ্রি-ডি ছবি দেখতে সবারই ভালো লাগে।
আর্টসবিট: আপনার কি মনে হয় না যে স্টিভেন স্পিলবার্গ আপনার ‘অবতার’ দেখে এক ধরনের প্রেরণা পেয়েছেন? অন্তত এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে।
ক্যামেরন: আমার মনে হয় তিনি সিনেমা হলগুলোতে এই প্রযুক্তির ব্যপক ব্যবহারের জন্যে অপেক্ষা করছেন। আমরা এখন বাজারে থ্রি-ডি টেলিভিশনের কথা ভাবছি। অবশ্য তিনি পরে তার ছবিগুলো থ্রি-ডি ডিভিডি আকারে ছাড়তে পারেন। আসলে আমরা কেউই চাই না আমাদের প্রোডাক্টগুলো বাজার ছেয়ে ফেলুক। আমিই মাত্র বছর দুয়েক আগে তার ছয়টি বিখ্যাত ছবি দেখে শেষ করলাম।
নিশ্চয়ই ১২ বছর পর সিনেমা হলগুলোতে ‘টাইটানিক’ আর চলছে না। এখন আমরা এটাকে নতুনভাবে সিনেমা হলগুলোতে আনার চেষ্টা করছি। আগামী ২০১২-তে জাহাজটি ডুবে যাওয়ার ১০০ বছর উপলক্ষে ‘টাইটানিক’-এর থ্রি-ডি সিনেমা হলগুলোতে ছাড়ার পরিকল্পনা করছি।
আর্টসবিট: আপনার নতুন ছবি কী হবে এ নিয়ে সবার মাঝে বেশ কৌতূহল রয়েছে। এটা কি ‘অবতার’ এর সিকুয়্যেল হবে?
ক্যামেরন: এখনও বলার সময় আসেনি। আসলে টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্সের সঙ্গে চুক্তিটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এখনো এই নিয়ে দেন-দরবার চলছে।
আর্টসবিট: ইন্ডাস্ট্রিতে কানাঘুষা চলছে যে, আপনি ‘ক্লিওপেট্রা’কে নিয়ে একটি থ্রি-ডি ছবি বানাতে যাচ্ছেন। ওখানে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি অভিনয় করবেন।
ক্যামেরন: ক্লিওপেট্রার কাহিনী আমাকে সবসময় আকর্ষণ করে। ক্লিওপেট্রা প্রকল্প নিয়ে একটা কাজ চলছে সনির সঙ্গে। কথাবার্তা চলছে, তবে এখনো কোনও সিদ্ধান্তে আসা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বেশ মজা হতে পারে, আপনারা কী মনে করেন? যেমন ধরুন, ক্লিওপেট্রা আর অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। এই কাজটি আমি করি বা না করি, তবে কাজটি যে মজার হবে তা বলা যায়।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৮৫০, অক্টোবর ২০, ২০১০