বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মজয়ন্তী উপলে ৭ নভেম্বর রোববার সন্ধ্যা ৭টায় পালাকার নাট্যদল মঞ্চস্থ করলো নতুন নাটক ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হওয়া নাটকটির এটিই ছিল প্রথম প্রদর্শনী।
‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ নাটকের সময়কাল ধরা হয়েছে ১৮৮৯ থেকে ১৮৯৫। এ সময়কালটি রবীন্দ্রনাথের জীবন-সাধনা পর্ব নামে পরিচিত। এই সময় তিনি তৎকালীন পূর্ববাংলায় অবস্থান করেছিলেন। কাছ থেকে দেখেছিলেন এই অঞ্চলের মানুষ, একান্ত হয়েছিলেন পূর্ববাংলার বৈচিত্রময় প্রকৃতির সঙ্গে। আর এসবের চমৎকার চিত্র রয়েছে সেই সময়ে রচিত তাঁর সমস্ত রচনাকর্মে, বিশেষত ‘ছিন্নপত্রে’।
বিলেত ফেরত যুবক রবীন্দ্রনাথ। ১৮৮৯ সালে পা রাখলেন আজকের বাংলাদেশের শিলাইদহে। নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র রবীন্দ্রনাথকে ঘিরেই নাট্য কাহিনীর আবর্তন। রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাতিজী ইন্দিরা দেবী চরিত্রটিও। সাথে সাথে তৎকালীন পূর্ববাংলা তথা শিলাইদহ, শাহজাদপুরের বিচিত্র মানুষ এবং তাদের জীবনও উঠে এসেছে রবীন্দ্রনাথের হাত ধরে।
পারিবারিক আবহে গড়ে ওঠা তাঁর সাহিত্যচর্চা নতুন রূপ পেল এখানে এসে। বাংলার মাটি বাংলার জল রবীন্দ্রনাথকে এবং তার সাহিত্যচর্চাকে প্রভাবিত করতে থাকে। তাইতো এই জনপদ থেকে বিদায় বেলায় তিনি বলে ওঠেন, ‘এখান থেকে যা আমি নিয়ে গেলাম, তা আমার সারা জীবনের সঞ্চয় হয়ে রইলো। ’
নাটকের মঞ্চ পরিকল্পনায় রয়েছে মুন্সিয়ানা। দুটি পাটাতনে মঞ্চের ভারসাম্য বেশ ভালোই রক্ষা হয়েছে । রাজবাড়ির আদল হিসেবে দুই পাশে দুইটি নকশা করা থাম মঞ্চকে করে তুলেছে আকর্ষণীয়। মঞ্চ পরিকল্পনা এবং সেট করেছেন অনিকেত পাল বাবু।
নাসিরুল হক খোকনের আলোক পরিকল্পনার খ্যাতির কথা সবারই জানা। তিনি এখানেও তার স্বাক্ষর রেখেছেন। আলোয় ফুটিয়ে তুলেছেন সন্ধ্যার আকাশ, ভোরের স্নিগ্ধ সকাল আর নদীর জল, চর।
পোষাক পরিকল্পনায় লুসি তৃপ্তি গোমেজ তুলে এনেছেন সেই রবীন্দ্র-যুগকে। কোরিওগ্রাফির কাজটি ভালো হলেও তার সাথে রেকর্ডে বাজানো আবহ-সংগীত খুব একটা মানিয়ে যায়নি বলেই অনেক দর্শকের অভিমত।
নাটকের প্রধান চরিত্রগুলোতে অভিনয় করছেন শামীম সাগর, নাহিদা শারমিন শর্মী, শাহানা বাপ্পি, সেলিম হায়দার, ফাহমিদা মল্লিক শিশির, ইভা খান, কাজী ফয়সল, মোহাম্মদ আলী পারভেজ, নূরী শাহ, শাহরিয়ার খান রিন্টু, অনিকেত পাল ও আমিনুর রহমান মুকুল।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৬৫৫, নভেম্বর ৮, ২০১০