ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর

শরিফুল ইসলাম, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১০

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের স্মরণে তাঁর জন্মভূমি নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামে স্থাপন করা হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। নড়াইল জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রতিষ্ঠানটিতে বীরশ্রেষ্ঠর ব্যবহৃত জিনিসপত্র ছাড়াও রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বই।

২০০৮ সালের ১৮ মার্চ উদ্বোধন করা হয় এ প্রতিষ্ঠানটি।

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্র“য়ারি নড়াইল সদর উপজেলার চ-ীবরপুর ইউনিয়নের নূর মোহাম্মদ নগরে (সাবেক মহিষখোলা গ্রাম) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মোঃ আমানত শেখ ও মা জেন্নাতুন নেছা। ডানপিটে নূর মোহাম্মদ সপ্তম শ্রেণীতে পড়াকালে শিাজীবন শেষ করে ১৯৫৯ সালে তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্টে (ইপিআর) যোগ দেন। ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ৮ নম্বর সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গোয়ালহাটি গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে এক সম্মুখযুদ্ধে সঙ্গীদের বাঁচাতে গিয়ে শহীদ হন।

নড়াইলের এই বীরশ্রেষ্ঠর স্মরণে এবং এলাকাবাসীর জ্ঞানের প্রসার ঘটানোর ল্য নিয়ে নড়াইল জেলা পরিষদ প্রায় ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ কলেজের দানকৃত জমির ওপর নির্মাণ করে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি। তবে গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটিতে চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ থাকলেও আছেন মাত্র একজন। জনবল সংকটে অধিকাংশ সময়ই বন্ধ থাকে লাইব্রেরিটি। লাইব্রেরিয়ান না থাকায় বইগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছেন না এলাকাবাসী।

স্থানীয় অধিবাসী আবদুল কাদের কাজী জানান, লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে ঠিকই কিন্তু জনবল না থাকায় আমরা এর সুফল পাচ্ছি না।

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের পত্নী বেগম ফজিলাতুনেছা বাংলানিউজকে বলেন, সরকার একটি মহৎ পরিকল্পনা নিয়ে শহীদের নামে প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে। কিন্তু জনবল না থাকায় বিভিন্ন জেলা থেকে দেখতে আশা সাধারণ লোকজন হতাশ হয়ে ফিরে যান, যা অত্যন্ত  দুঃখজনক।

গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটির একমাত্র কর্মচারী ইউনুস শেখ জানান, এত বড় একটি প্রতিষ্ঠানে চারজনের দায়িত্ব আমাকে একা পালন করতে হয়। প্রতিদিন এখানে স্কুল, কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ স্থানীয় শিানুরাগীরা এখানে আসেন বই পড়তে। জনবল না থাকায় বই পাঠকদের জন্য বাইরে দেওয়া হয় না।

নড়াইল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গাউস জনবল নিয়োগের মাধ্যমে বীরশ্রেষ্ঠর নামে প্রতিষ্ঠিত লাইব্রেরি ও জাদুঘরটি সম্পূর্ণরুপে চালু করতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

স্থানীয়রা মনে করেন, পর্যাপ্ত লোকবল দিয়ে সঠিকভাবে পরিচালনা করা হলে এটি দেশের একটি তীর্থস্থানে পরিণত হতে পারে।

বাংলাদেশ সময় ১৩৫০, ডিসেম্বর ১৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।