ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

নান্দনিক ফুলদানি

যাকারিয়া ইবনে ইউসুফ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০১২
নান্দনিক  ফুলদানি

মানুষ বরাবরই সৌন্দর্য পিপাসু। তাই মানুষ তার আশপাশের সবকিছুই সাজাতে চায় নিজের মনের মতো করে।

সারা দিনের কর্মব্যস্ততার পর একটু সুখের, একটু শান্তির আশ্রয় আমাদের ঘর। এ জন্যই একটু বেশি ভালোলাগা খুঁজে পেতে সবাই নজর দেই ঘরের সাজসজ্জার ওপর। ঘরের সাজের সব উপকরণ জুড়েই থাকা চাই স্নিগ্ধতার ছোঁয়া। ঘর সাজানোর সুন্দর স্নিগ্ধতা আনতে একটি শোপিস হচ্ছে ফুলদানি। আমাদের এবারের আয়োজন ঘরের সৌন্দর্যবর্ধনের অন্যতম অনুসঙ্গ নান্দনিক ফুলদানি নিয়ে।

ফুলদানিতে ঘরের সৌন্দর্য

ফুলদানি যেন বা শুধু শোপিসই নয়, কাজ করে ঘরের আসবাবের মতো। একগুচ্ছ টাটকা ফুলসহ একটি ফুলদানি আপনার ঘরের স্নিগ্ধতা যেমন বাড়িয়ে দেবে বহুগুণে। একটি সাধারণ ঘরের কোণ বা টেবিলে নান্দনিক ফুলদানি রাখলে ঘরের পরিবেশটা হয়ে উঠবে অন্য রকম। ফুল ছাড়াও ফুলদানির সৌন্দর্য কম নয় কোন অংশেই।

আমাদের ঘরের টেবিল, টিভির ওপর, কর্নার টেবিল, শোকেস, বেডসাইড যেখানেই ফুলদানি রাখা হোক না কেন ফুলদানির সৌন্দর্যে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে ঘরটি।

আমাদের দেশিয় সংস্কৃতি ফুটিয়ে তুলতে ব্যবহার করা যেতে পারে বাঁশ, বেত, মাটির ফুলদানিগুলো।

চাইলে পছন্দমতো টাটকা ফুল বা আর্টিফিসিয়াল ফুল দিয়েও সাজিয়ে রাখতে পারি ফুলদানি। বর্তমানে বাজারে নানা রকম ফুলদানি পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোর বৈচিত্র্য শুধু আকৃতি বা রঙেরই নয়, আমাদের দেশের বেশকিছু ফ্যাশন হাউস, হস্তশিল্প ও কুটিরশিল্প প্রতিষ্ঠান বৈচিত্র্য আনছে ফুলদানি তৈরিতে। এসব প্রতিষ্ঠান কাচ, মেটাল, সিরামিকের পাশাপাশি বাঁশ, বেত, প্লাস্টিক তার দিয়ে তৈরি করছে ব্যতিক্রমী অথচ আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে মিলে যায় এমন ফুলদানি।

রকমারি ফুলদানি

সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ধ্যান-ধারণা, রুচিবোধেরও হয়েছে পরিবর্তন। ফুলদানির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। একটা সময় শুধু মাঝারি আকারের চিকন ফুলদানিতে বাজার সয়লাব ছিল, কিন্তু মানুষ তার নিজ ঘরটিকে নান্দনিকভাবে সাজাতে যেখানে যেমন প্রয়োজন তেমন আকৃতির ফুলদানি ব্যবহার করছে। সেই সঙ্গে ঘর সাজাতে ঘরের আসবাবের রঙ,পর্দা ও ঘরের রঙের সঙ্গে মানানসই রঙের ফুলদানি ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে হরেকরকম ডিজাইনের ফুলদানি পাওয়া যাচ্ছে। তিন কোনা, চার কোনা ফুলদানি এখন সহজেই চোখে পড়ে।

চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের নিচতলায় ফুলদানি কিনতে এসেছিলেন মিসেস আসমা আক্তার। ফুলদানি নিয়ে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, সম্প্রতি নতুন বাড়িতে উঠেছি, ঘরের আসবাব সবকিছুই সাজানো হয়েছে। তার পরেও কোথায় যেন একটু কমতি দেখা যচ্ছে। তাই বেডরুমের কর্নার টেবিল ও সোফা টেবিলের জন্য একটি বড় ও ছোট সাইজের ফুলদানি নিতে এসেছি।

অন্যদিকে দেশিয় ফ্যাশন হাউস আড়ংয়ে ঘরের সৌন্দর্যবর্ধনে ফুলদানি কিনতে এসেছিলেন নবদম্পতি আশরাফ ও সোনিয়া। তাদের সঙ্গে ফুলদানি নিয়ে কথা বলতে গেলে মিসেস সোনিয়া বলেন, ঘরের সৌন্দর্যের অপর নাম ফুলদানি এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

কিন্তু সচরাচর মার্কেটগুলোতে যেসব ফুলদানি পাওয়া যায় সেগুলো সাধারণত একই ধাঁচের হয়ে থাকে। তাই একটু ব্যতিক্রম ধাঁচের ফুলদানি কিনতেই আড়ংয়ে আসা। শুধু ফুলদানিই নয়, আমাদের দেশি ফ্যাশন হাউসগুলো পোশাক- ব্যবহার্য সবকিছুতেই আনছে নতুনত্ব। সবকিছুই যেন হয়ে উঠছে শিল্প। মার্কেটগুলোতে যেসব ফুলদানি পাওয়া যাচ্ছে এগুলোর মধ্যে ক্রিস্টালের তৈরি হাঁস, পাখি বা জীবজন্তুর মুখে ফুল রাখার ব্যবস্থা করে ফুলদানি বানানো হয়েছে। আবার মাছ, এমনকি ফুলের আকৃতি দিয়েও তৈরি করা হয়েছে ফুলদানি। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় অপেক্ষাকৃত ছোট ও গোলাকৃতির টবের ন্যায় ফুলদানিগুলোই বর্তমানে বেশি চলছে। এর পাশাপাশি কাচের তৈরি গ্লাস বা বোতল আকৃতির বর্ণিল ফুলদানিগুলোও বেশ চলছে।

 ভিন্ন ধাঁচের ফুলদানি

কিছু কিছু ফুলদানি রয়েছে যেগুলো ফুলদানি হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি অন্য কাজেও লাগে। এর মধ্যে রয়েছে ফুলদানিতে ঘড়ি বসানোর ব্যবস্থা। এ ফুলদানিগুলো দেয়ালে ফুলসহ ঝুলিয়ে রাখা যায়। সেইসঙ্গে অামাদের ঘড়ির কাজটিও করবে সহজে। আবার কিছু কিছু ফুলদানির সঙ্গে রয়েছে টেবিল ল্যাম্প, কিছু কিছু ফুলদানিতে ফুল রাখার স্ট্যান্ডের

পাশাপাশি রয়েছে পেনহোল্ডারও। একের ভেতর দুই কাজের ফুলদানিগুলো একদিকে যেমন আপনার ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে অন্যদিকে জায়গাও কম প্রয়োজন হবে।

কোথায় পাবেন ও দরদাম

ডিজাইনের দৃষ্টিনন্দন ফুলদানিগুলো নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, প্রিন্স প্লাজা, মাসকট প্লাজা, উত্তরার নর্থ টাওয়ার, আলমাস সুপার শপ, সানরাইজ প্লাজা, নন্দন, আড়ং, যাত্রা, এগোরাসহ সব গিফট শপেই। ফুলদানিগুলোর দরদাম ওঠানামা করে মূলত এগুলো যেসব উপাদান দিয়ে তৈরি হয় এর ওপর, যেমন প্লাস্টিকের ফুলদানির দাম পড়বে ১০০ থেকে ৯০০ টাকা। কাচের ফুলদানির দাম পড়বে ৩৫০ থেকে চার হাজার টাকা। মাটির ফুলদানিগুলো পাওয়া যাবে আকারভেদে ৭০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। মেটালের তৈরি ফুলদানিগুলোর দাম একটু চড়া। এগুলো পাওয়া যাবে ৫০০ থেকে মানের ওপর নির্ভর করে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে। আর আমাদের দেশিয় বা বিভিন্ন হস্তশিল্পের প্রতিষ্ঠানে নান্দনিক ফুলদানিগুলোর দাম পড়বে ৩৫০ থেকে চার হাজার টাকা।

একটি ফুলদানি আমাদের ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে যেমন কাজ করে তেমনি আমাদের রুচিরও পরিচয় করিয়ে দেয় অন্যের সঙ্গে।

একটি সুন্দর ফুলদানি হতে পারে যে কোনো অনুষ্ঠানে আকর্ষণীয় উপহার।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।