মোবাইলে কথা শুনতে সড়ক পার হওয়া বা গাড়ি চালাতে চালাতে কথা বলার জন্য প্রাণনাশের আশঙ্কার ছাড়াও শুধুমাত্র দীর্ঘদিন ব্যবহারের জন্য আপনার শরীরে ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে।
মোবাইলে আপনি কতক্ষণ কথা বলেন।
মোবাইলে বেশি কথা বললে, বিভিন্ন রোগ বাড়তে থাকে। এই নিয়ে বির্তকেরও শেষ নেই। ভারতে ইতোমধ্যে দুই রাজ্যের হাইকোর্ট এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করে মোবাইলের ক্ষতি নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে। এর মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, পরিষ্কার জানিয়ে দিলো আর আলোচনা বা বিতর্ক করে লাভ নেই। মোবাইলের তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ ব্যাপক ক্ষতিকর। ১০বছর ধরে প্রতিদিন আধঘণ্টা (৩০মিনিট) ধরে কথা বলে চললে মস্তিষ্কে টিউমার হতে পারে। হতে পারে মস্তিষ্কে ক্যান্সারও। তরঙ্গায়িত ঐ ক্যান্সারের নাম ‘গ্লিয়োমা’।
মোবাইল তরঙ্গের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৪টি দেশের ৩১জন বিশেষজ্ঞকে নিয়ে একটি বিশেষ কমিটি তৈরি করেছিলো। ঐ কমিটির নাম দেওয়া হয়েছে ইন্টারন্যাশানাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (আইএআরসি)। এই কমিটি ৮দিন ধরে টানা একটি জরিপ চালায়। তা শেষ হয়েছে গত ৩০মে। এরপরেই ফ্রান্সের লিঁও শহরে ১ জুন রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলেন করে বিশেষজ্ঞদের সমীক্ষা ও গবেষণার ভিত্তিতে তৈরি জরিপ প্রকাশ করা হয়।
হু’র তরফে পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, হ্যাঁ, অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার ক্ষতিকারক। মোবাইলের তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ ভয়াবহ। এটি ক্যান্সার রোগ ঘটাতে পারে। অর্থাৎ মোবাইল তরঙ্গ ‘কার্সিনোজেনিক’।
হু অবশ্য মোবাইলের ক্ষতিকর দিকের সন্ধান দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। জানিয়েছে, কিছু সহজ বাঁচার উপায়ও।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মোবাইল কানে চেপে কথা বলার অভ্যাস ত্যাগ করাটা প্রথম দরকার। পারলে ‘হ্যান্ডস ফ্রি গ্যাজেট’ বা কানে গোজা যন্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। স্পিকার ফোনে কথা বলার অভ্যাসটা বরঞ্চ ভালো। পারতপক্ষে বদ্ধ ঘরে বসে মোবাইলে দীর্ঘক্ষণ কথা বলবেন না।
মেসেজ করলে কাজ মিটে গেলে মোবাইলে কথা না বলে মেসেজ লিখে পাঠিয়ে দিন। ফোনে ব্লু-টুথ থাকলেও সারাদিন এটাকে চালু রাখবেন না। এতদিন মোবাইল টাওয়ার নিয়ে অসংখ্য গবেষণা আর সমীক্ষা প্রকাশিত হলেও মোবাইল সেট নিয়ে হু’র এই বিবৃতি সত্যিই চিন্তার।