ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

ঘুরে আসতে পারেন যে কোনোটি...

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৬
ঘুরে আসতে পারেন যে কোনোটি...

বিশ্বের নানা দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের দেশীয় পর্যটন নিয়ে কাজ হচ্ছে। কয়েক বছর আগেও বেড়াতে যাওয়ার কথা হলেই যেখানে একমাত্র গন্তব্য ছিলো কক্সবাজার।

এখন সেখানে যোগ হয়েছে নানা নাম, নানা জায়গা। আসুন জেনে নেই আমাদের দেশের কয়েকটি পর্যটন স্পট সম্পর্কে। সময় করে ঘুরে আসতে পারেন যে কোনোটি।  
রাতারগুল
‘বাংলার আমাজান’ খ্যাত রাতারগুল বাংলাদেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট বা জলারবন।  
এখানে আছে একটি সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার। এখান থেকে রাতারগুলের চারদিকের মনভোলানো সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
চারদিকে শুধু থই থই পানি। এর মাঝে কোমর ডুবিয়ে বিভিন্ন মোহনীয় ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে  জাম, জারুল, হিজল, করচ, অর্জুন, ছাতিমসহ নানা প্রজাতির গাছ।  
চারদিকে সুনশান নীরবতার মাঝে ডিঙি নৌকার বৈঠার স্পর্শে কলকল শব্দ, গাছের ডালের ফাঁকে ফাঁকে রোদের লুকোচুরি, গাছের ছায়ার নৃত্য দেখতে দেখতে এখানে পর্যটক মাত্রই পাবেন এক নৈসর্গিক অনুভূতি।
জাফলং
বেড়ানোর জন্য যে কেউ বেছে নিতে পারেন প্রকৃতির রূপসী কন্যা জাফলংকে ।

সুদৃশ্য পাহাড় চুড়া, স্বচ্ছ জলরশি আর নানান রঙের নুড়ি পাথরের এক অপূর্ব সমন্বয় সিলেটের জাফলং। নগর সভ্যতার যান্ত্রিক কোলাহল ছেড়ে জীবন এখানে এসে মাথা লুকোয় একটু শান্তির খোঁজে। প্রকৃতির মায়াবী পরশে আনন্দে নেচে ওঠে মন। তাই ঈদের ছুটিকে  পরিপূর্ণ করে তুলতে যে কেউ আসতে পারেন পাহাড়,পানি ও পাথরভরা রূপকথার রাজ্য জাফলংয়ে।
মৌলভীবাজার
পুরো মৌলভীবাজার জেলাই আসলে পর্যটন স্পট। শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে এ জেলার বিভিন্ন হাওরে যেমন অতিথি পাখির আগমন ঘটে, তেমনি দেশি-বিদেশি পর্যটকরাও ভীড় জমায়। অতিথি পাখির কলকাকলিতে পাখির মেলা বসে।  
বড়লেখার মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, সুজানগরে আগর বাগান, বরহুম মিয়ার পাখিবাড়ি, রাজনগরের কমলা রাণীর দিঘি, পাঁচগাঁওয়ের লাল দূর্গা, কমলগঞ্জের মাধবপুর ও ক্যামেলিয়া লেক, মাগুরছড়া গ্যাসক্ষেত্র, মাগুরছড়া পুঞ্জি, কুলাউড়ার মুরইছড়া ইকোপার্ক, পৃথ্বিমপাশা নবাববাড়ি, শ্রীমঙ্গলের বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিটিআরআই), নীলকণ্ঠের সাত রঙের চা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, মনু ব্যারেজ, কমলগঞ্জের ধলই সীমান্তে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিস্তম্ভ এবং সবক’টি উপজেলায় শতাধিক চা বাগান।  

রয়েছে পাকড়া ধনেশ, ভীমরাজ, বন মোরগ-মুরগী, শ্যামা, হরিয়াল, টিয়া, মায়া হরিণ, সজারু, অজগর, আলতাপরি, সবুজ ঘুঘু, কালা মাথুরা, দুর্লভ প্রজাতির রঙ-বেরঙের প্রজাপতি। দক্ষ গাইড ঘুরে দেখাবে লাউয়াছড়া রিজার্ভ ফরেস্টের ভেতরের মাগুরছড়া ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান।  
বিরিশিরির 

সেন্টমার্টিনের গভীর নীল পানি, কিংবা জাফলং-এর স্বচ্ছ পানির গল্প অনেকই শুনেছেন, কিন্তু সবুজ আর নীলের মিশেলে অদ্ভূত-রঙের পানি দেখতে কেমন লাগবে একটু ভাবুন তো।  

নেত্রকোণার এক কোণায় অবস্থিত দুর্গাপুরের বিরিশিরির মূল আকর্ষণই হচ্ছে এই পানি। চীনামাটির পাহাড়, যার বুক চিরে জেগে উঠেছে এই নীলচে-সবুজ পানির হ্রদ। সাদা মাটির মাঝে রঙটাকে যেন আরও বেশি গাঢ় করে দিয়েছে।
নিঝুম দ্বীপ
চিকচিকে মোটা বালুকাময় এ সৈকত ঢালু হয়ে চলে গেছে সমুদ্রের অভ্যন্তরে। প্রতিদিন জোয়ার ও ভাটায় যেন স্নান করায় প্রকৃতি এ বেলাভূমিকে। আর এ  বেলাভূমিতে সাগরের ফেনিল ঊর্মিমালা আছড়ে পড়ার অপূর্ব দৃশ্য কারও হৃদয় আলোড়িত না করে পারে না। যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে সমুদ্র। সে যে নিঝুম দ্বীপ! 
রাঙামাটি
কাপ্তাই লেকের বুকে ছোট্ট একটি শহর রাঙামাটি। সর্বত্রই রয়েছে নানা বৈচিত্র্যের ভাণ্ডার। আর প্রতি বর্ষায় আসে রাঙামাটির নতুন যৌবন।
রাঙামাটির দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাজ বনবিহার। এ অঞ্চলের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর তীর্থ স্থান এটি। রাজ বনবিহারে দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারেন কাপ্তাই লেকের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য।
বান্দরবান
চিম্বুক আর নীলগিরির ওপর দাঁড়িয়ে মেঘ স্পর্শ করার ইচ্ছে হলে আপনাকে অবশ্যই ভ্রমণের জন্য বেছে নিতে হবে বান্দরবানকে।
নিশ্চয় মন চাইছে মেঘের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে। তবে আর দেরি কেন, জীবনের ছক থেকে বেরিয়ে হারিয়ে যেতে পারেন নীলাচলের মেঘে ঢাকা পাহাড়ে, মেঘলা লেকের স্বচ্ছ জলে, ভাসাতে পারেন ডিঙ্গি নৌকা অথবা ঘুরে আসতে পারেন চিম্বুক পাহাড়ের ম্রোদের গ্রামে।  

ছবি: আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।