মোঘল আমলের ইফতারি আয়োজনের সেই ঐতিহ্যের দেখা এবারও মিলেছে পুরান ঢাকার ইফতারি বাজারে। নিজস্ব ঐতিহ্য বজায় রেখে দোকানি আর ব্যবসায়ীরা প্রতি রমজানে আনছেন নতুন নতুন ইফতারি আয়োজন।
ইফতারি আয়োজনকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার চকবাজার, নাজিমউদ্দিন রোড, চক সার্কুলার রোড, নর্থ সাউথ রোড, শাহী মসজিদ রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় দুপুরের পর থেকেই তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। শত শত দোকানে পাওয়া যায় বাহারি রকমের ইফতার। এসব দোকানে থাকে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু এই ক্রেতারা কেবল পুরান ঢাকারই নন, বরং রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারা ছুটে আসেন এসব ইফতারসামগ্রীর টানে।
ফার্মগেট থেকে ইফতার কিনতে আসা মাহবুবুর রহমান জানান, আমার মনে হয় পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতার কেবল পুরান ঢাকাতেই পাওয়া যায়। এই ধারণা থেকেই আমি এখানে ইফতার কিনতে এসেছি।
শাহী মসজিদ রোডের ইফতারি বিক্রেতা সলিম শেখ জানান, শুধু মুসলমানরাই নন, অন্য সম্প্রদায়ের লোকরাও রমজান মাসে এখানে ইফতার খেতে এবং কিনতে আসেন। বেলা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রিবাট্টাও বাড়তে থাকে।
পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতার পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত খাবার হচ্ছে চকবাজারের ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়’। ১২ ধরনের কাবাবের সমন্বয়ে বহু বছর আগে এই খাবরের প্রচলন করেন কামেল মাহমুদ নামের এক ব্যক্তি। জনপ্রিয়তা থাকায় বংশপরম্পরায় এটি এখনো তৈরি হচ্ছে। এবার এ খাবারটির দাম রাখা হচ্ছে কেজিপ্রতি আড়াইশ থেকে ৩০০ টাকা।
পুরান ঢাকার আরেক ঐতিহ্যবাহী খাবার হচ্ছে সুতি কাবাব। পাশাপাশি চকবাজারের হালিমের অনেক কদর রয়েছে। এছাড়াও ইফতারির আয়োজনে রয়েছে ঘোল-মাঠা, বোরহানি, লাবাং শরবত, দইবড়া, গরুর চপ, মালাইকাপ, ফিরনি, মিষ্টি শিঙ্গাড়া, দই-বুন্দিয়া, ভেজিটেবল রোল, ব্যানানা রোল, চিকেন কাটলেট, চিকেন নারকেট, নিমাকপাড়া, টানা পরোটা, প্লেন পরোটা, চিকেন স্টিপ, শাহী জিলাপি ও বেগুনি।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৭৩৫, আগস্ট ১৪, ২০১০