ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

ঈদে কর্মমুখর ঈশ্বরদী বেনারসি পল্লী

শাহীন রহমান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১০
ঈদে কর্মমুখর ঈশ্বরদী বেনারসি পল্লী

ঈদকে সামনে রেখে পাবনার ঐতিহ্যবাহী ঈশ্বরদী বেনারসি পল্লী এখন কর্মমুখর। শেষ মুহূর্তে কাজে শ্রমিকদের দম ফেলার ফুসরত নেই।

প্রায় ৫০০ কারখানায় দিন-রাত নতুন নতুন ডিজাইনের বেনারসি, কাতান ও থ্রি পিস বুনন চলছে। এখানকার বেনারসি-কাতান এখন রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেনারসি ও কাতান শাড়ির পাশাপাশি এবারই প্রথম নারীদের চাহিদামতো নতুন নতুন ডিজাইনের থ্রি পিস তৈরি হচ্ছে ঈশ্বরদী বেনারসি পল্লীতে। আর এসব শাড়ি, থ্রি পিস শোভা পাচ্ছে দেশের অভিজাত শপিং মল ও বিপণী বিতানগুলোতে চলে গেছে। বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর। তাঁতিরা জানান, অন্যবারের চেয়ে এবার ঈশ্বরদীর বিখ্যাত বেনারসি, কাতান ও থ্রি পিসের পাশাপাশি নতুন ধরনের জর্জেট সেট, কনটেস্ট সেট শাড়ির চাহিদা বেশি।

ঈশ্বরদীর বিখ্যাত বেনারসি হাউস জাবেদ অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ জাবেদ বেনারসি জানান, ৩-৪টি রঙমিশ্রিত বিশেষ ধরনের সেট কালারের জর্জেট কাপড়ের ওপর হাতে কাজ করা শাড়ির চাহিদা এবার অগের তুলনায় অনেক বেশি। বিশেষ করে হাতে কাজ করা নতুন ডিজাইনের জর্জেটের কালার সেট এবং কাতানের তৈরি থ্রি পিস ও ওড়নার অর্ডার নিতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাঁতিদের।

তিনি আরো জানান, ঈশ্বরদীর তৈরি এসব বেনারসি কাতান জর্জেট শাড়ি ও থ্রি পিস উত্তরাঞ্চল ছাড়িয়ে এখন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঈশ্বরদী বেনারসি পল্লীতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু বাংলাদেশেই নয়, এখানকার তৈরি বেনারসি কাতান জর্জেট শাড়ি ও থ্রি পিস এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। তাঁতিরা জানান, আগে যেখানে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে জর্জেটের তৈরি শাড়ি ও থ্রি পিস চোরাই পথে কিংবা বৈধভাবে বাংলাদেশে আসতো, এখন উল্টো ঈশ্বরদী থেকে কাতান বেনারসি ও থ্রি পিস যাচ্ছে ভারতে।


নিয়মিত ভারতে যাতায়াতকারী কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ভারতে ঈশ্বরদীর তৈরি এসব শাড়ি-থ্রি পিসের কদর এখন অনেক বেশি। ঈশ্বরদীর তৈরি একটি শাড়ির দাম ২ থেকে ৫ হাজার টাকা হলেও এসব শাড়ি ঢাকা কিংবা অন্য যে কোনো এলাকার বড় শপিং মলে এর চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

তাঁতিরা আরো জানান, রঙ ও সুতোর দাম আগের চেয়ে অনেক গুণ বেড়েছে। তাছাড়া ঈশ্বরদী বেনারসি পল্লীর তাঁতিরা তাদের তৈরি পণ্যের প্রকৃত মূল্য থেকে বরাবরই বঞ্চিত হচ্ছেন। এ কারণে ঈশ্বরদীতে কর্মরত প্রায় ৮ হাজার তাঁতির ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ঈশ্বরদীতে কর্মরত তাঁতিদের মধ্যে বেশির ভাগই শ্রমিক নারী। অথচ এই নারীদের শ্রম এখনো উপেতিই রয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন তারা। শ্রম ও পণ্যের প্রকৃত মূল্য পেলে এই শিল্প আরও বিকশিত হতে পারে বলে মনে করেন এ পেশার সঙ্গে জড়িতরা।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২৩০০, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।