ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

বলতে হবে তাঁতীদের কথা, তবেই আসবে সমৃদ্ধি   

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
বলতে হবে তাঁতীদের কথা, তবেই আসবে সমৃদ্ধি   

তাঁত শিল্পের সঙ্গে আমাদের নিবিড় সম্পর্ক সেই আদিকাল থেকেই। তাঁত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে যারা মূখ্য ভূমিকা পালন করছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে তারা হলেন তাঁতী।

 

তাদের হাতেই তৈরি হয়ে থাকে বাহারি রঙের তাঁতে তৈরি পণ্য। তাঁত শিল্প বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করেছে এবং এই তাঁত শিল্প থেকেই প্রতি বছর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়ে থাকে। তাই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা তাঁতীদের কথা আমাদেরকে তুলে ধরতে হবে শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।  

টাঙ্গাইল জেলা মূলত তাঁত শিল্পের জন্য বিখ্যাত। এখানকার তাঁতে তৈরি হয়ে থাকে নানা ধরনের তাঁতের শাড়ি। তেমনি একটি তাঁত পণ্যের নাম খেশ। ঐতিহ্যবাহী পণ্য হলেও এই শিল্পের পেছনে যেসব তাঁতীরা কাজ করছেন তারা দিন দিন কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। দিনে একজন তাঁতী দু’টির বেশি শাড়ি তৈরি করতে পারেন না কিন্তু এর ফলে তারা যে মূল্য পাচ্ছে তাতে তাদের দৈনন্দিন জীবিকা নির্বাহ কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এছাড়াও খেশের তেমন প্রচার না হওয়াতে অনেকে সময় হাতে কাজও থাকেনা। অথচ একটি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে তারা যুগ যুগ ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন তাদেরকে যদি সব দিক থেকে সহযোগিতা করা যায় তাহলে ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পটিকে টেকানো সম্ভব হবে।

খেশের তাঁতীদের কথা সব জায়গায় তুলে ধরার মাধ্যমে একটি ঐতিহ্য যেমন বেঁচে যাবে তার সঙ্গে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হবে। খেশ একটি রিসাইকেলিং প্রোডাক্ট তাই এটি পরিবেশবান্ধব এবং এতে করে পুরাতন কাপড়কে নতুন রূপ দিয়ে একটি নান্দনিক কাপড় তৈরি হচ্ছে। পুরাতনকে নতুন রূপ দেওয়ার ফলে খেশের কাঁচামাল সংগ্রহে তেমন একটা বেগ পেতে হচ্ছে না। সহজলভ্য এই পণ্যটিকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে তাঁতীদের দিকে নজর দেওয়া সবার দায়িত্ব।  

যারা খেশ নিয়ে কাজ করে তাদের উচিত খেশ শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এসব তাঁতীদের কথা সব জায়গায় তুলে ধরা। এতে করে তারা যেমন নিজেদের সম্মানিতবোধ করবেন সেই সঙ্গে উৎসাহ নিয়ে কাজ করতে আগ্রহবোধ করবেন। অনেকে দেখা যায় এ পেশায় যথাযথ সম্মানী না পেয়ে এবং উৎসাহের অভাবে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।  

যত বেশি খেশ নিয়ে আলোচনা হবে তত বেশি সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে। খেশের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ার অর্থ যারা এর পেছনে কাজ করছেন তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে। এতে করে যেমন একটি শিল্পকে টিকিয়ে রাখা যাবে সেই সঙ্গে অনেক নতুন সম্ভাবনার সূচনা হবে। এখন যারা তাঁতী আছেন তারা তাদের পরের প্রযন্মকেও এই কাজের প্রতি উৎসাহিত করবেন।


আমাদের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে বর্তমান সমস্যা নিয়ে আমরা এত বেশি চিন্তা করি যে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে দেখতে পাই না। আজ হয়তো খেশের বিক্রি তেমন নেই কিন্তু পরিবেশ দূষণের এই যুগে খেশের সম্ভাবনা নিয়ে মনে কোনো সন্দেহ নেই।  সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবায়ন করার জন্যই তাঁতীদের দিকে নজর দিতে হবে।  

লেখা: নিগার ফাতেমা 
স্বত্বাধিকারী: Ariya's Collection

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।