রূপালী পর্দার মানুষগুলো সবার কাছে সবসময় স্বপ্নের। বাংলা সিনেমার সবচেয়ে সফল ও জনপ্রিয় মুখ কবরী।
চট্টগ্রামের মেয়ে কবরীর(তার আসল নাম মিনা পাল)। তার বাবা শ্রীকৃষ্ণ দাস পাল এবং মা শ্রীমতি লাবণ্য প্রভা পাল।
কবরীকে তার ভক্তদের বর্ণনায় এভাবে পাওয়া যায়, কবরীর সিনেমা দেখার পর মাথায় শুধু তার হাসি লেগে থাকত। চিত্রালী থেকে কবরীর সাদা-কালো ছবি কেটে পড়ার বইয়ের মধ্যে রেখে দিতাম এবং প্রায়ই লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতাম।
আসলে সেই ষাটের দশক থেকেই তার অভিনয়, ব্যক্তিত্ব ও ফ্যাশন সচেতনতার কারণে তিনি ছিলেন অনেকের কাছেই অনুকরণীয়।
গ্রাম্য বধুর মতো শাড়ি পরা থেকে শহুরে পোশাক শার্ট-প্যান্টেও তিনি ছিলেন সাবলীল। প্রতিটি চরিত্র তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন ঠিক চরিত্রের সাজেই।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় সুতরাং ছবির নায়িকা হিসেবে অভিনয় জীবনের শুরু করেন কবরী।
কাজ করেছেন ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’, ‘পরিচয়’, ‘অধিকার’, ‘বেঈমান’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘সোনালী আকাশ’, ‘দীপ নেভে নাই’-এর মতো দর্শকপ্রিয় সিনেমাতে। ২০০৬ সালে তার পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘আয়না’ মুক্তি পায়।
ব্যক্তি জীবনে কবরী প্রথমে চিত্ত চৌধুরীকে বিয়ে করেন। সেই সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি সফিউদ্দীন সরোয়ারকে বিয়ে করেন। ২০০৮ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কবরী পাঁচ সন্তানের মা।
অভিনয় ও ব্যক্তি জীবনের বাইরেও কবরীর রয়েছে আরও কিছু পরিচয়। ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয়েছে তার লেখা স্মৃতিচারণমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’। এছাড়া ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন কবরী।
ঢালিউডের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই মহাতরকা কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ১৩ দিনের মাথায়, ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল রাত ১২টা ২০ মিনিটে ঢাকার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২১
এসআইএস