করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যার বিপরীতে আমাদের দেশের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেওয়ার মতো সুযোগ খুবই সীমিত। এজন্য কেউ আক্রান্ত হলে চেষ্টা করা হয় বাড়িতেই প্রথমে চিকিৎসা দিতে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, করোনাভাইরাস যেহেতু শ্বাসনালীর মাধমে ফুসফুসকে আক্রান্ত করে থাকে, তাই শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়ে থাকে। যখন স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিয়ে সমস্যা হয়, তখন রোগীকে উপুড় করে শোয়ানো হলে কষ্ট কিছুটা কমে।
এছাড়াও উপুড় হয়ে শোয়ার ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস বাড়ে ও ইনফেকশনের প্রবণতাও কমে। কোভিড হলে সারাদিনে নিয়ম করে শরীরের অক্সিজেন সম্পৃক্ততা মাপতে হবে। যদি দেখেন সেটা ৯৪’এর নিচে নেমে গিয়েছে, তাহলে প্রোনিংয়ের পদ্ধতি শুরু করুন। কারণ অক্সিজেন পেতেও সাহায্য করে এই পদ্ধতি।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্বাসকষ্টের সমস্যা তীব্র হলে এভাবে শোয়ানো হয় রোগীকে। কারণ উপুর হয়ে শোয়া অবস্থায় ফুসফুসের অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ে। করোনা আক্রান্ত রোগীর ফুসফুসে সংক্রমণ হলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়।
প্রোনিংয়ের পদ্ধতি যেভাবে করা যায়:
৪-৫টি বালিশ সঙ্গে রাখুন। প্রথমে ধীরে ধীরে উপর হয়ে শুতে হবে। একটা বালিশ মুখ বা গলার কাছে রাখবেন, ২থেকে ৩টি বালিশ বুকের নীচ থেকে পেটের নিচে রাখবেন। আরেকটা বালিশ পায়ের তলায় রাখবেন।
উপুর হয়ে আধা ঘণ্টা বা ঘণ্টা খানেক থাকতে পারেন। তারপর ধীরে ধীরে ডান দিকে ঘুরে যেতে হবে। এভাবে আপনি আপনার সুবিধামতো আধা ঘণ্টা থেকে ঘণ্টা দু’য়েক থাকতে পারেন। তারপর বালিশ পিঠের কাছে রেখে বসে থাকতে হবে আরও আধা ঘণ্টা থেকে দু’ঘণ্টা। তারপর শুয়ে আবার বাঁ দিক ফিরে শুতে হবে। এরপর আবার শুরুর মতো উপুর হয়ে শুতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একজন সুস্থ মানুষের ৯৬ থেকে ৯৮ শতাংশ অক্সিজেন ওঠানামা স্বাভাবিক। কিন্তু তা ৯০-এর নিচে নামলেই শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। মাথা, বুক ব্যথা ও হার্টবিট বেড়ে যেতে পারে শরীরের অক্সিজেন কমে গেলে। সুস্থ থাকলে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫-এর নীচে গেলেও চিন্তার কারণ নেই। তবে করোনা বা অন্য কোনো রোগ থাকলে ৯৪ থেকে কমলেই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
খুব সহজে অক্সিজেনের মাত্রা দেখা যায় অক্সিমিটারের সাহায্যে। এই যন্ত্রটি আঙুলের ডগায় লাগালেই পরীক্ষা সম্ভব এটি দিয়ে হার্টবিটও মাপা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২১
এসআইএস