‘আমি হিজাব ব্যবহার করছি নয় বছরের বেশি সময় ধরে। হিজাব ব্যবহারের ফলে চুলের অনেক সমস্যা হয়।
হিজাব ব্যবহারের ফলে চুল নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা এভাবেই বলেছেন সোশ্যাল মিডিয়ার পরিচিত মুখ মডেল এবং ইনফ্লুয়েন্সার রথী আহমেদ। ২০১৭ সাল থেকে পথচলা শুরু হলেও শোবিজে তার পরিচিতি বাংলাদেশের ‘হিজাবি মডেল’ হিসেবে। তার হিজাব ব্যবহার, চুলের সমস্যা ও প্রতিকার নিয়ে তিনি বিস্তারিত কথা বলেছেন বাংলানিউজের সঙ্গে।
রথী আহমেদ বলেন, আমি চুল সুন্দর রাখার জন্য খুব বেশি কিছু করি না। আমি রেগুলার যে নিয়মটা অনুসরণ করি, সেটা হচ্ছে আমি নিয়মিত চুলের তেল ব্যবহার করি আর শ্যাম্পু করি। শ্যাম্পুর পরে আমি কন্ডিশনার ব্যবহার করি। ডারমাটলজিস্ট দেখিয়ে আমার হেয়ার ফল যেন ভালো হয়, সেজন্য ডারমাটলজিস্ট আমাকে যে কয়েকটি শ্যাম্পু সাজেস্ট করে, আমি সেগুলোই ব্যবহার করি। আর আমার কাছে মনে হয় একই শ্যাম্পু সবাইকে তো কখনোই স্যুট করে না, তাই যাকে যেটা স্যুট করে তার সেটাই ব্যবহার করা উচিত।
রথী বলেন, আমার চুলের যত্ন আমি নিজেই নিয়ে থাকি। সময় পেলে আমি চেষ্টা করি কোনো হেয়ারপ্যাক ব্যবহার করতে। এটা সপ্তাহে একবার হতে পারে। আর যেটা রেগুলার করা উচিত সেটা হলো হেয়ার ওয়েল ব্যবহার করা। আমি এটা রেগুলার ব্যবহার করি আর রেগুলার শ্যাম্পু করি।
আমার চুলের যত্নের রুটিনটা খুবই সিম্পল। সেটা হচ্ছে আমি হেয়ার ওয়েল ব্যবহার করে শ্যাম্পু দিয়ে চুলটা ধুয়ে ফেলি। এরপর আমি ন্যাচারালি আমার চুল শুকাই, যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকালে অনেক সময় হেয়ার ফলটা বেশি হয়। আর আমি মাথা আঁচড়াই খুব যত্ন করে। যেহেতু গরমে আমাদের মাথার ত্বক থেকে অয়েলটা বেশি বের হয়, আমাদের মাথার ত্বকটা ঘেমে যায়, যেটা ড্যানড্রফ/খুশকি বানাতে সাহায্য করে। এজন্য গরমে আমাদের চুলে খুশকিটা বেশি দেখা যায়।
এই গরমে চুল সুন্দর রাখার জন্য যেটা করতে হবে, হেয়ার অয়েলের ওপরে কোনো কথা নেই। হেয়ার অয়েলটা ব্যবহার করতে হবে। যারা যে হেয়ার অয়েলটা ব্যবহার করে, সেটাই তারা ব্যবহার করবে। সঙ্গে ক্যাস্টর অয়েল, অ্যামন্ড অয়েল মিক্সড করে তেলটাকে একটু গরম করে তারপরে মাথায় লাগানো যেতে পারে। এভাবে ৪০ মিনিট বা এক ঘণ্টা রেখে এটাকে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। যে যেই শ্যাম্পুটা ব্যবহার করে, সেটা দিয়েই ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপরে কেউ চাইলে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারে।
শ্যাম্পু বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে কনফিউশন ফিল করলে হিজাব ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি স্প্যাশাল শ্যাম্পু যেকোন একটি ব্যবহার করতে পারেন । এক্ষেত্রে হিজাব ব্যবহারকারীদের মাঝে ক্লিয়ার হিজাব পিওর শ্যাম্পু এখন বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু কেন তা একবার জেনে নেয়া যাক, ক্লিয়ার হিজাব পিওর শ্যাম্পুতে আছে নিউট্রিয়াম ১০, প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলস। এটি স্ক্যাল্পের ন্যাচারাল প্রটেকটিভ লেয়ার অ্যাক্টিভেট করে, যেটা দীর্ঘ সময় ড্যানড্রাফ ফ্রি চুল পেতে সাহায্য করে। যার কারণে ক্লিয়ার হিজাব পিওর শ্যাম্পু ব্যবহার করলে গরমে হিজাব ব্যবহারের অস্বস্তি থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
অনেকেই ন্যাচারালি রাইস ওয়াটার ব্যবহার করে। আমিও মাঝে মাঝে করি, এটা আমার মনে হয় হেল্পফুল। আরেকটা যেটা করা যেতে পারে, সেটা সাপ্তাহিক, প্রতিদিন নয়। সেটা হলো সপ্তাহে একবার কোনো একটা হেয়ারপ্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে। এটা হেনা প্যাক হতে পারে, অন্য কোনো ঘরোয়া পণ্য দিয়েও বানানো হতে পারে। তো আমার মনে হয় গরমে এইসব রুলসগুলো ফলো করলে চুল ভালো থাকবে। সিল্কি অ্যান্ড শাইন থাকবে।
তিনি বলেন, আমার মনে হয় যে, আমি সবসময় হিজাব পরি, এটা আমার মর্যাদা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। আর আমি যেমন, তেমন থেকেই আমি অনেক কাজ করতে পারছি। অনেকেই মনে করে হিজাব একটা বাধা। কিন্তু আমার কখনোই সেটা মনে হয়নি। কারণ হিজাব পরে আমি অনেক কাজ করেছি, যেটা অনেকেই চিন্তা করে হিজাব পরলে এগুলো করা সম্ভব না। আমার হিজাব পরতে অনেক বেশি ভালো লাগে। আর এটা আমার অনেক পছন্দের একটা পার্ট বলা যেতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২১
এইচএমএস/এসআইএস