আসছে ঈদ। ঈদের ছুটিতে পরিবার-প্রিয়জন নিয়ে অনেকে যেমন দেশের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে প্রমোদ ভ্রমণে বের হবেন, অনেকে তেমনি বের হবেন বিদেশি মনোমুগ্ধকর পর্যটনকেন্দ্র ভ্রমণে।
ঈদকে সামনে রেখে অপরূপ সাজ নেওয়া মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ থেকে আকাশপথে দূরত্ব মাত্র পাঁচ ঘণ্টা। কম সময়ের মধ্যে কম খরচে ঘুরে বেড়ানোর জন্য মালয়েশিয়া যে পাঁচটি কারণে সবাইকে কাছে টানবে তা জেনে নেওয়া যাক।
*এশিয়ায় একখণ্ড ইউরোপ
ইউরোপের দেশগুলোর মতোই মালয়েশিয়ার সবকিছু বেশ সাজানো-গোছানো। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থাও অনেক উন্নত। সড়কপথ, রেলপথ, জলপথ ও আকাশপথ বেশ কার্যকর এবং আরামদায়ক। সাজানো-গোছানো দেশটিতে ভ্রমণে যোগাযোগ সুবিধা প্রত্যাশা অনুযায়ী হওয়ায় প্রতি বছর বিভিন্ন দেশের হাজারো পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন সানন্দে। প্রধান ভাষা মালয় হলেও কম বেশি সবাই ইংরেজি ভাষায় কথা বলে। তাই যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভাষাগত দিক থেকেও তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হয় না এখানে।
*তিন জাতির মিলনমেলা
মালয়েশিয়ায় প্রধান জাতি মালয় হলেও আরও দু’টির প্রধান জাতির বাস এখানে; চীনা ও ভারতীয়। মালয়েশিয়া এমন একটি দেশ যেখানে অন্তত তিনটি ভাষায় কথা বলা যায়। মালয়, ইংরেজি এবং স্ব স্ব জাতির ভাষা; চীনা হলে মান্দারিন, ভারতীয় হলে তামিল বা হিন্দি। এছাড়া, সবগুলো জাতিই নিজেদের সাংস্কৃতিক উৎসব সমান গুরুত্ব সহকারে উদযাপন করে। তিনটি প্রধান জাতির মিলনমেলার এ দেশে সবসময়ই কোনো না কোনো উৎসব লেগেই থাকে। উৎসবপ্রিয়দের জন্য মালয়েশিয়ার চেয়ে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু আর কী হতে পারে?
*কম খরচে ভ্রমণ
অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে অনেক কম খরচে ভ্রমণ এবং কেনাকাটা করা যায় মালয়েশিয়ায়। এদেশের এক মুদ্রার (রিংগিত) মান বাংলাদেশি ২৪ টাকা। এখানে এক স্থান থেকে অপরস্থানে যাতায়াতের খরচ অনেক কম। শহরে ট্রেনে অথবা বাসে খরচ ১-৩ রিংগিতের মত। প্রতি বেলা খাবারে রিংগিত খরচা করতে হয় ৫-১০। এছাড়া, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মধ্যে তুলনা করলে অনেক কম খরচে বেশ ভালো সার্ভিস পাওয়া যায় মালয়েশিয়ায়।
*পুরো মালয়েশিয়াই যেন পর্যটনকেন্দ্র
মালয়েশিয়ায় ভ্রমণের জন্য রয়েছে প্রচুর স্পট। কুয়ালালামপুর, পেনাং, লংকাউই দ্বীপ, তিওমান দ্বীপ, পেরহেন্তিয়ান দীপ, ইপো, সেলাঙ্গর, মেলাকা, পেরাক ইত্যাদি এখানকার প্রধানতম দর্শনীয় স্থান। শুধু ভ্রমণই নয়, প্রতিটি স্পটেই রয়েছে উপভোগের নানা আয়োজন। এর মধ্যে-ডাইভিং, ট্র্যাকিং, ক্যাম্পিং, রাফটিং সহ অনেক অ্যাডভেঞ্চার রাইডে চড়ে ভ্রমণকে বেশ উপভোগ্য করা যেতে যেতে পারে।
*বাহারি সব খাবারের সমাহার এবং কেনাকাটার মহাআয়োজন
মালয়েশিয়ায় মানুষ বেশ খাবার প্রিয়। স্থানীয়দের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যটকদের রসনাবিলাসের জন্য প্রায় প্রতিটি দেশের খাবার আয়োজন রয়েছে এখানে। এর মধ্যে ভারতীয়, চীনা, মালয়, থাই, আরবি, ইরানি, কোরিয়ান, জাপানিজ ও ইউরোপীয় খাবারের স্বাদ জিহ্বাকে আরও বেশি প্রলুব্ধ করবে। আর কুয়ালালামপুরকে বলা হয় চতুর্থ বৃহৎ শপিং শহর। আকর্ষণীয় সব স্থানে জমজমাট শপিং মল গড়ে উঠেছে। এছাড়া, নাইট মার্কেট তো রয়েছেই।
এ কথা বলাই বাহুল্য যে, সারাবছর পর্যটকদের আনাগোনা থাকলেও ঈদকে কেন্দ্র করে এখন অপরূপ সাজে ভ্রমণপ্রিয়দের টানছে সমুদ্রবুকের মালয়েশিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৪