কুয়ালালামপুর: বাংলাদেশের রাজনীতির হাওয়া সমান্তরালেই বয়ে চলে মালয়েশিয়ায়। জন্মভূমির টানেই মালয়েশিয়ায় ঘরোয়া পরিবেশে সভা সেমিনার করে আসছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
মালয়েশিয়ায় ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের অংশগ্রহণ রয়েছে রাজনীতিতে। কাগজে কলমেই দেশটিতে প্রায় ছয়লাখ বাংলাদেশির বাস। প্রবাসে দলীয় রাজনীতিকে চাঙ্গা করতে দেশের সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় কমিটিও বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ৭ আগস্ট বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের উপস্থিতিতে কুয়ালালামপুরের সানওয়ে কনভেনশন হলে মালয়েশিয়া ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। এ কমিটিতে মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির শিক্ষার্থীরা রয়েছেন।
এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, ছাত্ররাই আগামী দিনের কর্ণধার। বাংলাদেশের রাজনীতি আর প্রবাসের রাজনীতি এক নয়। প্রবাসে মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে আসেন। বহুদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হন তারা। দেশ গঠনে এসব শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি মালায়া’র ছাত্র হুমায়ুন কবিরকে আহ্বায়ক, লিংকন ইউনিভার্সিটির ছাত্র এম ওয়াজেদ মজুমদার ওয়াসিমকে যুগ্ম আহবায়ক, বাইনারি ইউনিভার্সিটির ছাত্র সৈয়দ মিনহাজুর রহমান মিনহাজসহ ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি।
ঘোষণার পর কমিটি বেশ কয়েকটি সামাজিক কার্যক্রমে দলের কাছে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছে। মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগকে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে সহযোগিতা করে যাচ্ছে ছাত্রলীগ ।
গত ২০ অক্টোবর ছাত্রলীগের বর্ধিত সভায় মালয়েশিয়া ছাত্রলীগকে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে এবং শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে মালয়েশিয়ায় থেকে নিজেদের সামর্থের সবটুকু ঢেলে দেওয়ার শপথ নেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এদিক মালয়েশিয়ায় ছাত্রলীগকে আরো শক্তিশালী করতে, একটি প্রতিনিধি দল বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেধাবী ছাত্রদের সন্ধানে নেমেছে।
হুমায়ুন কবির, ওয়াসিম ও সৈয়দ মিনহাজ বাংলানিউজকে জানান, আমাদের কর্মী সংগ্রহ প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। এখন মালয়েশিয়া ছাত্রলীগকে সাংগঠনিকভাবে আরো শক্তিশালী করে তোলা হবে। এখানে প্রবাসের রাজনীতিতে ছাত্রলীগের ভূমিকা আরো লক্ষণীয় হবে।
তারা জানান, বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রবাসে বাংলাদেশিদের ভাবমূর্তি জাগিয়ে তুলবে ছাত্রলীগ। আর এ কাজ ছাত্রলীগকেই দিয়ে সম্ভব। কারণ এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন। বাংলা এবং বাঙালির ছয় দশকের সংগ্রাম স্বপ্ন এবং সাহসের সারথী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাংলাদেশের ইতিহাস আর ঐতিহ্যের গর্বিত অংশীদার। জাতির ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায়ে রয়েছে ছাত্রলীগের প্রত্যক্ষ ভূমিকা।
মালয়েশিয়ায় ছাত্রলীগকে সংগঠিত করতে অবিরত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউনিভার্সিটি মালায়ার গবেষক অ্যাডভোকেট মিনহাজ উদ্দিন মিরান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আজ অবধি স্বাধীনতা, সংগ্রাম আর শিক্ষার নিশ্চয়তার ছাত্রসমাজের তথা দেশবাসীর জন্য অতন্দ্র প্রহরী ছাত্রলীগ। তাই মালয়েশিয়ায় ভিন্ন মেজাজে সংগঠনটি এগুচ্ছে নানা কৌশল নিয়ে। শেখ হাসিনার ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নসহ সরকারের নানামুখী কাজে সহযোগিতা করছেন এখানকার ছাত্রলীগের কর্মীরা। প্রবাসে থেকে বিএনপি-জামায়াতের অনলাইন কার্যক্রম প্রতিরোধসহ আরো বেশ কিছু কাজ হাতে নিয়েছেন তারা।
তিনি বলেন, বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের অনলাইন অপপ্রচারের শক্ত প্রতিরোধ করছে মালয়েশিয়া ছাত্রলীগ।
নভেম্বরের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মালয়েশিয়া আগমন উপলক্ষে বিশাল শো-ডাউনের প্রস্ততি রয়েছে বলে জানান ছাত্রলীগ নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ০৬০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৪