ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায় ভিন্ন ইমেজ গড়ে তুলেছেন ‘দাতো’ এন সাহা

জাহিদুর রহমান,স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৫
মালয়েশিয়ায় ভিন্ন ইমেজ গড়ে তুলেছেন ‘দাতো’ এন সাহা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কুচাইলামা, কুয়ালালামপুর থেকে: মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ এশিয়ার বিভিন্ন ম্যাগাজিনে তার সাফল্য তুলে ধরে বের হয় নানা প্রচ্ছদ প্রতিবেদন। মালয়েশিয়ার সুলতান তার সামাজিক ও ব্যবসায়িক  কর্মকাণ্ডের সাফল্যের জন্যে রাষ্ট্রীয় সম্মানজনক স্বীকৃতি হিসেবে দিয়েছেন ‘দাতো’ উপাধী।



তিনি বাংলাদেশের দাতো নিধীর সাহা। বাবা সুধীর চন্দ্র সাহা (মৃত)। ঢাকার সাভারের দক্ষিণপাড়ার ছেলে। জন্ম ১৯৬৪ সালে। সাভার অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে ১৯৮১ সালে ভর্তি হন ঢাকার মোহাম্মদপুরের গ্রাফিক্স আর্ট ইনস্টিটিউটে। সেখানকার পর্ব শেষ করে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ নিয়ে ৮৫ সালে পাড়ি জমান স্বপ্নের দেশ মালয়েশিয়ায়। আজকের মালয়েশিয়া তখন এত উন্নত ছিলনা।

এসেছিলেন উচ্চ শিক্ষার জন্য। এখন তিনিই গড়ে তুলেছেন বিশাল প্রতিষ্ঠান। রাজধানী কুয়ালালামপুরের কুচাইলামায় জালান ইনরাহানা সড়কের পাশে প্রায় ৬০ হাজার বর্গফুট এলাকাজুড়ে গড়ে তুলেছেন ‘বিএস প্রিন্ট মালয়েশিয়া’ (সিনরিয়ান বারহাট) নামের আর্ন্তজাতিক মানের ছাপাখানা। যেখানে কাজ করছেন ত্রিশ বাংলাদেশিসহ ৮০ দেশি-বিদেশি। মালয়েশিয়া ছাড়াও তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন নেপাল,মিয়ানমারের নাগরিক।

স্কলারশিপে পাওয়া অর্থ জমিয়ে মাত্র দুই হাজার রিঙ্গিত দিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। শুরুটা ছিল বেশ কঠিন। প্রথমে কাজের অর্ডার জোগাড় করে অন্য ছাপাখানা থেকে তা ছাপিয়ে সরবরাহ করতেন। বলতে গেলে ‘মিডলম্যান’। ১৯৯১ সালে ‘বিএস প্রিন্ট মালয়েশিয়া’ কারখানার নিবন্ধন নেন।

এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে মালয়েশিয়ার প্রকাশনী সংস্থার ৪৫-৫০ ভাগ বাজার এখন এই প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর এমনকি অস্ট্রেলিয়া থেকেও নিয়মিত কাজের অর্ডার পাচ্ছেন।

কারখানায় বাংলানিউজের মুখোমুখি হয়ে দাতো এন সাহা জানান, আমি কখনো চাকরি করার কথা ভাবিনি। জানেনই তো, সাহা পদবীর লোক মানেই রক্তে ব্যবসা। কারণ জীবনের প্রথম লক্ষ্যটাই ছিল চাকরি করা নয়, চাকরি দেওয়া। বিশ্বের সর্বাধুনিক মেশিনে আমার প্রতিষ্ঠানে অনেকে কাজ করছেন, এটাই আমার আনন্দ। যে প্রতিষ্ঠানটি প্রিন্টিং সেক্টরে মালয়েশিয়ার প্রথম আইএসও সনদপ্রাপ্ত।

২০১৩ সালে পাহাং রাজ্যের সুলতান হাজী আহমেদ শাহ’র কাছ থেকে লাভ করেন বিশেষ উপাধী ‘দাতো’।

ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি নিয়োজিত রয়েছেন নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডে। দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রয়েছেন রোটারি ক্লাব অব পুত্রজায়ার সঙ্গে। মানুষের জন্য করতে চান। তবে তা আড়ালে থেকেই।

যে বাংলাদেশিরা অবৈধ হয়ে মালয়েশিয়ার পথে পথে ঘোরেন, সেই মালয়েশিয়ায় অন্য এক বাংলাদেশের ইমেজ গড়ে তুলেছেন দাতো এন সাহা। প্রবাসীদের কাছেও প্রিয়মুখ। নানা প্রয়োজনে প্রবাসীদের পাশে দাঁড়ান। ভাবেন দেশের কথা।

আমি চাই আমার প্রতিষ্ঠানে আরো বাংলাদেশি কাজ করবে। আমার দেশের মানুষ অনেক পরিশ্রমী। আজকের এই মালয়েশিয়া গড়ে তোলার পেছনেই রয়েছে বাংলাদেশের লাখো শ্রমিকদের অবদান।

আমরা চাই সামাজিকভাবে প্রবাসে বাংলাদেশিরা ঐক্যবদ্ধ থাকুক। এতে তাদেরই জয়, যোগ করেন দাতো এন সাহা।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৫
জেডএস


** ‘টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার’ যখন সেলফি স্ট্যান্ড বিক্রেতা!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ