ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আরও

মানবিক গুণাবলি বিকাশের প্রশিক্ষণ দেয় রমজান

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৯
মানবিক গুণাবলি বিকাশের প্রশিক্ষণ দেয় রমজান ঐতিহ্যবাহী হোসেনপুর লাল মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মোস্তফা মাহমুদ

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী হোসেনপুর লাল মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মোস্তফা মাহমুদ বলেছেন, মানুষের পশু প্রবৃত্তিকে দমন করে মানবিক গুণাবলি বিকাশের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য মহান আল্লাহ তাওয়ালা আমাদের জন্য রমজান মাসকে সিয়াম সাধনার মাস হিসেবে নাজিল করেছেন। 

সোমবার (২০ মে) বিকেলে শহরের হোসেনপুর লাল মসজিদে বাংলানিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি আরও বলেন, ইসলাম মানুষের জন্য যতগুলো আচরণীয় অনুষ্ঠানকে অনিবার্য করেছের তার মধ্যে সিয়াম একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আল্লাহর রসুল (সা.) বলেছেন, ইসলাম ৫টি ভিত্তির উপর ভর করে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

যার চতুর্থ স্তম্ভ হলো রমজান মাসে রোজা রাখা।

ঈমানদার মানুষদের জন্য আল্লাহ বলেছেন, তোমাদের জন্য রমজান বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। যেমনটা তোমাদের পূর্বের লোকদের জন্য বিধিবদ্ধ করা হয়েছিল। রমজানের মূলত উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে তাকওয়াবান করা। আর তাকওয়া হচ্ছে মানুষ কু-প্রবৃত্তির দমনের পূর্ণ সক্ষমতা অর্জন করা। অর্থাৎ: মানুষ লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, কাম-ক্রোধ ইত্যাধির উর্ধ্বে উঠে নীতি আইন ও বিধি-বিধানের পূর্ণ আনুগত্য করবে।  

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের হুকুমের আলোকে নিজের জীবন পরিচালনা করতে সব রকমের ত্যাগ ও কষ্ট হাসিমুখে বরণ করার সক্ষমতা অর্জন করার নামই হচ্ছে তাকওয়া। আল্লাহ প্রতিবছর একমাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মানুষকে প্রশিক্ষণ দেন। ক্ষুধার জ্বালা, তৃষ্ণার কষ্ট এবং কামনা থেকে দূরে থাকার শক্তপোক্ত ট্রেনিং। এই ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে জীবনের বৃহত্তর পরিমণ্ডলে মানুষ নিজেকে আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে।

পক্ষান্তরে আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য একজন মানুষ যেমন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত না খেয়ে থাকে। সেই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অভাবি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাতে হয়।

মাওলানা মোস্তফা মাহমুদ বলেন, রমজানুল মোবারকে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে একজন সায়েম বা একজন মুমিন ব্যক্তি নিজের লোভ, ক্ষুধা, ক্রোধ ও কামনার উপরে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করবে। জাত-গোত্র, শ্রেণী বিভেদ ভুলে অভাবি ও বঞ্চিত মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখতে হবে।  অভাবী মানুষের ক্ষুধার জ্বালা, দুঃখী মানুষের কষ্ট হৃদয় দিয়ে উপলব্দী করা শিখবে। মাহে রমজানের এই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের ব্যবহারিক জীবন পরিচালনার মাধ্যমে সমাজকে, দেশকে এবং বিশ্বকে মানুষদের বসবাসের জন্য সুন্দর ও সুখী-সমৃদ্ধশালী হিসেবে যেন গড়ে তুলতে পারি। যেটি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের উদ্দেশ্য।  

পবিত্র রমজান মাসে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটিয়ে যেন আমরা আল্লাহর প্রিয়পাত্র হই। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সেই তওফিক দান করুন।

রমজানবিষয়ক যেকোনো লেখা আপনিও দিতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘন্টা, মে ২২, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।