নারায়ণগঞ্জ: ফতুল্লায় মহিউদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ীকে বেধড়ক লাঠিচার্জ করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ ঘটনায় স্থানীয়রা পুলিশ সদস্যদের এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় ফতুল্লার মুসলিমনগর এতিমখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী আলাপের পর ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হাসান জামিলকে তার সঙ্গীয় ফোর্সসহ উদ্ধার করে।
এলাকাবাসীর দাবি, ডিবি পুলিশের সদস্যদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা একেকজন একেক নাম বলে নিজেদের আসল পরিচয় লুকাতে চেষ্টা করছিলেন।
আহত মহিউদ্দিন মুসলিমনগর এলাকার হাজী ওয়াজ উদ্দিন মাদবরের (মৃত) ছেলে। তিনি কাপড়ের ব্যবসা করেন। তিনি জানান, মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হতেই একজন লোক লাঠি নিয়ে এসে বেধড়ক পেটাতে থাকে আমাকে। হাতে পায়ে পিঠে পেটায়। আমি আমার অপরাধ সম্পর্কে জানতে চাইলে আমার বাঁ কানে থাপ্পড় দেয়। তখন স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে মারধর করা ব্যক্তি নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়।
স্থানীয়রা তার কাছে মারধরের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি। তখন স্থানীয় লোকজন ওই ব্যক্তিসহ তার সঙ্গে আসা বাকিদের অবরুদ্ধ করেন। পরে তাদের একজন নিজেকে ডিবি পুলিশের উপ পরিদর্শক জামিল বলে জানান।
স্থানীয় লোকজন জানান, পুলিশ এভাবে একজন ব্যক্তিকে পেটাতে পারে না। লাঠি দিয়ে মারতে মারতে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপরও লাঠিচার্জ থামাচ্ছিল না। তখন আশপাশের সকলে গিয়ে ডিবি পুলিশের সকলকে গাড়িসহ অবরুদ্ধ করেন। এরপর থানা পুলিশ আসলে ডিবির সকলকে তাদের কাছে হস্তান্তর করে দেওয়া হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মাসুদ রানা জানান, একজন ব্যক্তিকে কি কারণে ডিবির এসআই হাসান জামিল লাঠিচার্জ করেছে বিষয়টি জানা নেই। তবে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনদের শান্ত করে এসআই হাসান জামিল ও তার সঙ্গীয় ফোর্সকে উদ্ধার করে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে এসআই হাসান জামিলের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ডিবির আরেক উপ পরিদর্শক (এসআই) কামরুল জানান, আমরা ১০০ পিছ ইয়াবা ও দুই কেজি গাঁজাসহ দুজনকে আটক করেছি। এ সময় তাদের ছিনিয়ে নিতে তাদের সহযোগী ও স্বজনরা আমাদের ওপর হামলা করে। কিন্তু তাদেরকে ছিনিয়ে নিতে পারেনি। আটক দুজন হলেন- নবীনগর এলাকায় আব্দুল মজিদের ছেলে সুজন (২৫) ও মাসদাইর বাজারের আলী আহমেদের ছেলে কামরুল ইসলাম কাকন (৪২)। এতে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে।
তবে স্থানীয়দের দাবি, মুসলিমনগর এলাকা থেকে কাউকে গ্রেফতার বা আটক করেনি ডিবি বা পুলিশ।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) তরিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমার নলেজে রয়েছে। আসলে ডিবি পুলিশের অভিযানগুলো সিভিল পোশাকে হওয়ায় মাঝে মাঝে এ ধরনের ভুল বোঝাবুঝি হয়। সেখানে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি অভিযান হয়েছিল। আমরা অভিযানে গাঁজাসহ দুজন আসামিকে ধরেছি।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২২
এমআরপি/এমজে