ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পহেলা বৈশাখ থেকে ভূমিকর অনলাইনে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২২
পহেলা বৈশাখ থেকে ভূমিকর অনলাইনে

ঢাকা: আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে ভূমিকর শুধু অনলাইনের মাধ‌্যমে পরিশোধ করা যাবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ওই দিন থেকে ম‌্যানুয়ালি ভূমিকর নেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।

বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে এমনও কমপ্লেইন আসলো যে, ৫০০ টাকা কর দিতো আর কিছু টাকা আলাদা করে রাখা হতো। এখনও কিছু কিছু জায়গায় সমস‌্যা হচ্ছে। কিন্তু আমি চেয়েছিলাম ৩১ ডিসেম্বর থেকে ম‌্যানুয়ালি ভূমিকর নেওয়া বন্ধ করতে। সচিব বললেন, এটা বাংলা মাসের সঙ্গে হিসাব-নিকাশ। আমরা যদি বাংলা নববর্ষ থেকে এটা করি ভালো হয়।

মন্ত্রী বলেন, এজন্য আগামী ১ বৈশাখের পর থেকে আর কেউ ম‌্যানুয়ালি ভূমিকর দিতে পারবে না। তাহলে এটা বন্ধ হয়ে গেল, তাহলে তো সে (ভূমি অফিসের কর্মকর্তা) কিছু করতে পারবেন না। কারণ সে ম‌্যানুয়ালি নিতেই পারবেনি না। আমরা চাইছি মাঠ পর্যায়ের সমস‌্যাকে মিনিমাম লেভেলে নিয়ে আসতে।

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে অভিযোগ এলেই আমি বলি, তদন্ত করুন এবং ব্যবস্থা নিন এবং আমাকে জানান কী ব‌্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অফিসারদের মধ্যে আমি একটা প‌্যানিক রেখেছি। আমি এসব ক্ষেত্রে খুবই রূঢ়।

তিনি বলেন, এখানে বসেছি সম্মান কামানোর জন‌্য। এত কষ্ট করে যদি ওদের জন‌্য দুর্নাম কামাতে হয়, তাহলে লাভটা কী? এ ম‌্যাসেজ অলরেডি মাঠে আছে, তারপরও… চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী। বাট নো প্রবলেম। তারা তাদের মতো চলুক, আমি আমার মতো চলবো। সিস্টেম ডেভলপ করেছে, সিস্টেমের মধ্যে আটকাবো। আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমরা আউটসোর্সিং করে সারা দেশে সকল এসিল্যান্ড অফিসে সিসি ক্যামেরা বসাবো। এ প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি।

মাঠ পর্যায়ের ভূমি অফিসগুলোতে এখনো সমস্যা রয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেসব জায়গায় এখনো লোকজনকে হয়রানি হতে হচ্ছে। কিন্তু এসবকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে আমরা চেষ্টা করছি। অভিযোগগুলো শোনার জন্য আমরা কল সেন্টার করেছি। তা আরও হালনাগাদ করা হচ্ছে। কল সেন্টারে বিদেশ থেকেও ফোন করে সমস্যার সমাধান হচ্ছে। আমরা হয়রানির জায়গাটা কমিয়ে এনেছি। জমি এমন একটি বিষয়, যা সাধারণ মানুষের কাছে একটি নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের লক্ষ‌্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব। আমরা অনেকটা সাকসেসফুল বাট মাঠ পর্যায়ে সমস‌্যা এখনও রয়ে গেছে। এজন‌্য আমরা সিস্টেমটা ডেভেলপ করছি। সিস্টেমটা যখন পুরোপুরি ম‌্যাচিউরড হয়ে যায় তখন সে চাইলেও আর (দুর্নীতি করতে) পারবে না।

মন্ত্রী বলেন, ভূমি ডিজিটাইজেশনের ক্ষেত্রে আমি খুব সাহসিকতার সাথে এগিয়ে গেছি বলা যায়। আমরা ল‌্যান্ড ডেটাব‌্যাংক করেছি। আমরা ই-মিউটেশন করেছি। আমরা অনলাইনে ভূমি কর ব‌্যবস্থা চালু করেছি। আমরা অনলাইনে ভূমি মামলা ব‌্যবস্থাপনা সিস্টেম করছি। ডিজিটাল সার্ভে করছি, ৫ কোটি খতিয়ান আপলোড করা হয়েছে। ডিজিটাল সার্ভে সারাদেশে রোল আউট করবো।

সম্প্রতি মর্টগেজ ডাটাব্যাংক করা হয়েছে জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমরা কেইস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম করছি। আমরা অফিসারদের মন মানসিকতা পরিবর্তনের চেষ্টা করছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভূমি নিবন্ধন আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন। ভূমি নিবন্ধন বিভাগ যদি আমাদের পর্যায়ে চলে আসে তবে অনেকটা সুবিধা হবে। তবে এটা একসাথে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকলে ভালো হতো। আমি আমার মন্ত্রণালয়ে একটি টিমসেট করেছি।

পার্বত্য এলাকায় জমি জরিপের অগ্রগতি জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি রয়েছে। সেখানে একটা কমিশন রয়েছে। কাজ করতে গেলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এখানে কাজ করতে আমাদের একটু কষ্ট হচ্ছে। সেখানে জরিপের কাজে কিছু জটিলতা রয়েছে। আমরা চাচ্ছি একটু ধীর গতিতে কাজটা করতে।

বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২২
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।