ঢাকা, রবিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্টেডিয়াম চাই না, খেলার মাঠ চাই: পাপন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২২
স্টেডিয়াম চাই না, খেলার মাঠ চাই: পাপন

ঢাকা: রাজধানীতে ক্রিকেট খেলার মাঠ নেই উল্লেখ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ও সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, আমি স্টেডিয়াম চাই না, আমাদের খেলার মাঠ দরকার।

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশান-২ এ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি পার্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

পাপন বলেন, ঢাকা শহরে ক্রিকেট খেলার মাঠ নেই। আমরা আগে আবাহনী মাঠে খেলতাম, গত ৮ বছর ধরে সেখানে খেলার কোনো সুযোগ নেই। আমরা ধানমন্ডি মাঠে খেলতাম, সেটাও গত ৭ সাত বছর ধরে বন্ধ। মিরপুরের স্টেডিয়াম ছাড়া ঢাকা শহরে ক্রিকেট খেলার একটিও মাঠ নেই। আমি স্টেডিয়াম চাই না, আমাদের মাঠ দরকার। কারণ আগে ক্রিকেট খেলতো ঢাকা শহরের ছেলেরা। আর এখন জাতীয় দলে গত ৫-৭ বছরে ঢাকার কোনো ছেলে নেই। সব আসে গ্রামগঞ্জ থেকে। এটা ভালো, কিন্তু ঢাকার ছেলে-মেয়েরা খেলবে না কেন? এর কারণ মাঠ নেই।

তিনি বলেন, প্রত্যেকটি উপজেলায় স্টেডিয়াম করা হচ্ছে। আমার উপজেলায় একটি জায়গা ছিল, মাঠ ছিল। বিকেল হলেই ছোট ছেলে-মেয়েরা সেখানে খেলাধুলা করতো। এখন সেখানে স্টেডিয়াম করে তালা মেরে রেখেছে। গত চার বছরে সেখানে কেউ ঢুকতে পারে না। তাহলে স্টেডিয়াম করলো কার জন্য? এই বিষয়গুলো আমাদের দেখা উচিত।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশ আছে, যারা বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগ সরকারকে পছন্দ করে না। কিন্তু তারাও নির্দ্বিধায় স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা একটি গরীব দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি এবং খুবশিগগিরই আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করব।

বিসিবি সভাপতি বলেন, যখনই স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি এই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়, তখনই একের পর এক হামলা হয়। তাই আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। সামনে যে সময় আসছে, হয় স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি থাকবে, না হয় স্বাধীনতা বিরোধীরা থাকবে। একসঙ্গে আর সহাবস্থান সম্ভব নয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। এই মাসে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি পার্ক উদ্বোধন করতে পেরে আমরা ডিএনসিসি কৃতার্থ।

মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে মাঠের বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ আছে। কিন্তু স্কুল ছুটির পর মাঠে তালা দিয়ে দেওয়া হয়। আমি অনুরোধ করবো, এই মাঠগুলো যদি সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হয়, তাহলে আমরা সেটার দেখভাল করে স্কুল ছুটির পরও এলাকাবাসীর জন্য খোলা রাখতে পারব।

রাজধানী ঢাকা আমাদের সবার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে, চার নেতার জীবনের বিনিময়ে যে দেশ আমরা পেয়েছি, সেই দেশকে কি সত্যি আমরা ভালোবাসি? এই দেশকে যদি আমরা সত্যি ভালোবাসতাম, তাহলে আজ খাল দখল হতো না, মাঠ দখল হতো না, রাস্তার মধ্যে আমরা ময়লা ফেলতাম না। আসুন সবাই মিলে সবার ঢাকা, সুস্থ সবল আধুনিক ঢাকা গড়ি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য উপস্থিত ছিলেন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা প্রমুখ।

উল্লেখ্য, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি পার্কটি আগে গুলশান সেন্ট্রাল পার্ক নামে পরিচিত ছিল। মহান স্বাধীনতার অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পার্কটি তার নামে নামকরণ করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৮ একর জায়গার উপর অবস্থিত পার্কটি নতুন করে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। এতে লাগনো হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার দেশি গাছ। এছাড়া পার্কটিতে হাঁটার জন্য আধুনিক রাস্তা করা হয়েছে। আছে শিশু ও বড়দের খেলার জায়গা ও মাঠ, জিমনেসিয়াম, টয়লেট এবং রেইন ফরেস্ট। বাইরে থেকে যাতে পথচারীরা পার্কটির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারেন এজন্য নিচু করে প্রাচীর দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
এসসি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।